ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ১১ বছর ধরে নিখোঁজ থাকার পরও সিলেট-২ আসনে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইলিয়াস আলী। ২০১২ সালে ঢাকা থেকে গুম হন বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী। এরপর থেকে আজ অবধি সন্ধান মেলেনি তার।
২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ইলিয়াস আলীর জনপ্রিয়তাকে কেন্দ্র করে আসনটিতে এমপি নির্বাচিত হন ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের নেতা মোকাব্বির খান। এর আগে এলাকায় তার তেমন পরিচিতি ছিল না।
এদিকে, আবারো দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন সেই ইলিয়াস আলী। এবার তাকে নিয়ে বোমা ফাটালেন সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত এমপি প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী (এহিয়া)।
শনিবার রাতে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘কিছু মানুষের আতঙ্ক ছিলেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলয়াস আলী। তাদের ধারণা ছিল ইলিয়াস আলী মাঠে থাকলে আর নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যাবে না। আর এই আতঙ্কিতরা ষড়যন্ত্র করে এম ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে। নির্বাচন আসলেই মানুষ এই ইলিয়াস আলীর গান শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘বিপদে পড়লে বাবা শাহ জালালের মাজারে যায়, আর নির্বাচন আসলে আমাদের এলাকায় নাম নেয় ইলিয়াস আলীর। আর এই ইলিয়াস আলীর নাম নিয়েই নির্বাচনে পারও হয়ে যায়।
গত নির্বাচনে এই আসনে বাড়িঘর না থাকলেও মোকাব্বির খান সূর্য প্রতীকে ইলিয়াস আলীর নাম নিয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ইলিয়াস আলী গুম হওয়ার পর বিশ্বনাথের ৮ হাজার মানুষ মামলার আসামি হয়ে ঘরছাড়া হয়েছেন। আমি নির্বাচিত হওয়ার আগে বিএনপি’র কারও সঙ্গে আমার সম্পর্কই ছিল না। আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ইলিয়াস আলীর কথা বলেছি।’
গত শনিবার রাতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দেওকলস গ্রামের বাড়িতে নির্বাচনী উঠান বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি’র নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আন্দোলন করছেন সারা দেশে নৌকা আটকানোর জন্য। তাই আমি বলবো, প্রথমে ঘরের নৌকা আটকান, পরে বাইরের নৌকা আটকাবেন। তবে ঘরে বসে আটকানো যাবে না, বাইরে গিয়ে ভোট দিয়ে নৌকা আটকাবেন।
এখন রাতে ভোট হবে না। কারণ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েই গেছেন। আমি জয়ী হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন, নৌকা বিজয়ী না হলেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তাই এখন আর রাতে ভোট দেয়ার দরকার নেই। ফলে আওয়ামী লীগের মামলা আর তালিকা থেকে বাঁচতে হলে নৌকা আটকিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেয়ার ইঙ্গিত করেন।’
ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর ছোট ভাই সালমান চৌধুরী সাম্মির পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর ছোট ভাই সহল আল রাজী চৌধুরী, এলাকার মুরুব্বি মধু মিয়া, আব্দুর রহিম, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোহর আলী, সুমন আহমদ সুনন, সংগঠক দুলাল মিয়া ও আহমদ আলী।