ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনো বিতর্কের শেষ হয়নি। এর মধ্যে চলমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় নৌকা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং তাদের সমর্থক নেতারা একে অপরকে সেই দুই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও জিতে আসা নিয়ে প্রকাশ্যে টিপ্পনি কেটে যাচ্ছেন। এবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক দায়িত্বশীল আওয়ামী লীগ নেতা ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের রাত ১২টা ১ মিনিটে উপর থেকে আসা ক্ষুদে বার্তার পরই মধ্যরাতেই ৬০ শতাংশ ভোট মেরে দেয়া হয়েছে বলে প্রকাশ্য জনসভায় মন্তব্য করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনে বিএনএম মনোনীত নোঙ্গর মার্কার সদস্য প্রার্থী মুহাম্মদ শরীফ বাদশার নির্বাচনী পথসভায় গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আজিজুল হক নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিককে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন।
আজিজুল হক মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফার ছোট ভাই। সিরাজুল মোস্তফা ২০১৮ সালের সেই নির্বাচনের সময় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
সোমবার নোঙ্গর মার্কার এমপি প্রার্থী মুহাম্মদ শরীফ বাদশার প্রচারণায় গিয়ে আজিজুল হক বলেন, ‘আমি আজকে বুকে হাত দিয়ে আপনাদের সামনে কসম করে বলি। আমি আজ বাধ্য হয়ে নৌকার বিপক্ষে ভোট নিতে এসেছি এজন্য। আমাদের মনে এখন অনেক ব্যথা।’
নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিককে উদ্দেশ্য করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সহ-সভাপতি বলেন, ‘আপনি যে বার প্রথম এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, তখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হয়েছেন। আপনাকে ভোট দেয়া লাগে নাই। এরপর যে বার আপনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, তখন ঠিক রাতের ১২টা ১ মিনিটে আমাদের কাছে মেসেজ আসে, স্ব-স্ব কেন্দ্রে আপনারা ৬০ শতাংশ ভোট নিয়ে ফেলেন।
যেন আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত হয়।’
আজিজুল হক বলেন, ‘তখন দিনের বেলায় আরও ৪০ শতাংশ ভোট থাকে। তবে সেই ৪০ শতাংশ ভোট যদি বিএনপি’র বাক্সেও চলে যেতো, এরা কখনো নির্বাচিত হতে পারতো না। আপনি সেবার রাতে ১২টা ১ মিনিটে যে ভোট নেয়া হয়েছে, সে ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ২ লাখ ৩০ হাজার ৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক। তার নিকটতম প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ পেয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৮৯ ভোট। আসনটির সাবেক এমপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা হামিদুর রহমান আজাদ ওই নির্বাচনে তৃতীয় হয়েছিলেন।