ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০ দিনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২৩ হাজার ৪৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময়ে দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৮৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর গত ১৬ সপ্তাহে দলের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে দলের এক হাজার ৪৮২ নেতাকর্মীর।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
আসন্ন ‘ডামি নির্বাচন বর্জন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ’ দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানানো ও আইনজীবীদের কর্মসূচি ঘোষণা করতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
সংবাদ সম্মেলন থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি শেখ হাসিনার পদত্যাগ, ডামি নির্বাচন বর্জন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগ, সারাদেশে সব জেলা আদালত, সেশন আদালত, মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত, মুখ্য জুডিসিয়াল আদালতসহ সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এ লক্ষ্যে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ সব বিচারকদের কাছে আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তের চিঠি হস্তান্তর করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কায়সার কামাল বলেন, ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার’ এ তিন লক্ষ্য নিয়ে একাত্তরে বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর আমরা কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাত্র তিন বছরের মাথায় দেশের জনগণের আজীবনের স্বপ্ন গণতন্ত্র, স্বাধীন বিচার বিভাগ, জনগণের চিন্তা ও বাক স্বাধীনতা এবং সংগঠন করার অধিকার জলাঞ্জলি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা করেছিল।
তিনি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি সরকার আরও একটি নীলনকশার পাতানো ডামি নির্বাচনের আয়োজন করছে। কথিত নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর জন্য সরকারি দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিদ্রোহী প্রার্থী, অনুগত প্রার্থী প্রভৃতি হরেক রকমের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। কারা ডামি হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে তা-ও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়।