DMCA.com Protection Status
title="৭

নির্বাচন পরবর্তী বৈশ্বিক ধাক্কা সামাল দেয়াই বড় চ্যালেঞ্জ- পররাষ্ট্র সচিব

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নির্বাচন পরবর্তী যেকোনো বৈশ্বিক চাপ কূটনৈতিকভাবে সামাল দেয়াই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তবে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষত: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমা বিশ্বের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসবে কিনা, তা নিয়ে এখনই ভাবছে না সরকার।

সচিব বলেন, আপাতত লক্ষ্য সুষ্ঠু ভোট। এ নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অঙ্গীকার রয়েছে। এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ। কাঙ্ক্ষিত টার্ন ওভার হবে বলেই আশা করছি। জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা বা অন্য যাই আসুক আমরা আশা করি তা যৌক্তিকভাবেই মোকাবিলা করতে পারবো। গতকাল সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় ক্যাফেটেরিয়াতে কূটনৈতিক রিপোর্টারদের সঙ্গে ইয়ারঅ্যান্ডিং মতবিনিময় সভায় মিলিত হন পররাষ্ট্র সচিব।

সেখানে নির্বাচন, রাজনীতি, মার্কিন ভিসা নীতি ও নিষেধাজ্ঞাসহ সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। সেই সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে আসে বিদায়ী বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাফল্য, ব্যর্থতা এবং নতুন বছরের চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গও।

সচিব বলেন, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনই চিন্তিত বা ভীত হওয়ার কিছু নেই। বিদেশি কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য নির্বাচন হচ্ছে না।


বিশেষ কোনো দেশের স্বীকৃতি পাওয়া যাবে কিনা? সেই চিন্তা বা বিবেচনায় আমরা কাজ করছি না। বরং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং গণতান্ত্রিক সরকারের ধারাবাহিকতা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য যারা নির্বাচনে এসেছে তাদের নিয়েই যাতে ইসি নির্বাচনটি করতে পারে সেজন্য সরকারের তরফে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, সরকারকে জানিয়েই ছুটিতে ভারতে যান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস্‌। বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকসহ এই সময়ে ছুটিতে যাওয়া সব দূতই সরকারকে অবহিত করে গেছেন।

এটাই কূটনৈতিক শিষ্টাচার। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দেড় দশকে উন্নত দেশগুলোর কাছে ঋণগ্রহীতা থেকে তাদের অংশীদার হয়েছে বাংলাদেশ। আর বিদায়ী বছরে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বহুজাতিক ফোরামে ভোটে বাংলাদেশের বিজয়কে বড় অর্জন হিসেবে দেখতে চান তিনি।

প্রক্সিওয়ারে বাংলাদেশের ভূখণ্ড কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না: এদিকে প্রক্সিওয়ার ফিজিক্যাল ওয়ার কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশের ভূখণ্ড কখনোই কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে জানান পররাষ্ট্র-সচিব। বলেন, আমাদের ভূমিকে আমরা কখনো ব্যবহার করতে দেবো না। সেটা যদি আমাদের প্রতিবেশী বা অন্য কারও বিরুদ্ধে যায় অথবা অন্য কারও স্বার্থের ব্যাপারও থাকে, তারপরও দেবো না।

এ ব্যাপারে আমরা ক্লিয়ার। আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিপক্ষে। বাংলাদেশ এ অঞ্চলে ছায়া যুদ্ধ চায় না বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক। প্রশ্নকর্তা বলেন, মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাসে প্রচুর ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ দেখা যাচ্ছে। সেই বিবেচনায় কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অঞ্চলে কোনো ছায়া যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন? সেই বিবেচনায় কি বাংলাদেশ কোনো প্রক্সিওয়ারে যাবে না বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেছেন? জবাবে সচিব বলেন, উনি কোন প্রেক্ষাপটে বলেছেন, এটা আমার জানা নেই।

অবশ্যই আমরা কোনো ধরনের যুদ্ধ চাই না। সেটা বাস্তব হোক আর ছায়া যুদ্ধ হোক, সেটার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান। মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। ভারতও আমাদের প্রতিবেশী। এ দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে আমাদের সীমান্ত রয়েছে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, উন্নয়ন। আরও কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেই বিষয়টি দেখা।

যেকোনো ধরনের দ্বন্দ্ব, ছায়া যুদ্ধ বা অন্য কিছু আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারে না। সেজন্য আমরা সবসময় চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে আসছি। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বন্দ্বে না জড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার যখন রোহিঙ্গাদের পাঠালো তখন নানা রকমের উস্কানি ছিল। কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে বার বার বলা হয়েছে, কোনো দ্বন্দ্বে না জড়াতে। কোনো কিছুতেই জড়াইনি। কারণ আমরা কোনো দ্বন্দ্ব চাই না।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!