ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকায় ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটের উৎসব খুঁজে পাননি ভোটাররা। অন্যান্য আসনের মতো এখানেও ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে সুনসান অবস্থা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোটার উপস্থিতিও তেমন বাড়েনি। দু’একজন ভোট দিলেও কেন্দ্রগুলোতে দীর্ঘলাইন কিংবা ভিড় দেখা যায়নি। এমর পরিস্থিতি দেখে ভোটাররা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগের আমেজ পাওয়া যায়নি।
এদিন সকাল থেকেই ভোট কেন্দ্রের বাহিরে বুথে অবস্থান নিয়েছিলের বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকরা। ভোটার তালিকায় ভোটারদের নাম খুঁজে বের করতে সহায়তা করছেন তারা। ঢাকা-১৫ আসনে ৮ জন প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রগুলোয় রয়েছে শুধু নৌকার এজেন্ট। এ ছাড়া কোনো প্রার্থীর এজেন্ট’র দেখা কেন্দ্রে মিলেনি। বেগম রোকেয়া সরণীতে অবস্থিত মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, হাজী ইউসুফ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কাজীপাড়া ছিদ্দিকিয়া ফাযিল মাদরাসার কেন্দ্রগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়।
প্রিজাইডিং অফিসাররা আশায় ছিলেন বিকাল হলে ভোটাররা কেন্দ্রমুখী হবেন।
তবে বিকাল পর্যন্তও কেন্দ্রে আশানুরূপ ভোটার আসেননি। ভোটাররা বলছেন, গত নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকলেও এখন তার কিছুই নেই। আবার এই নির্বাচনে ভোট দিতে পেরে অনেকে তাদের আবেগও প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ তাদের মতামত প্রকাশ করতে রাজি হননি।
দুপুর ১টা বেজে ৫২। ভাবী কহিনুর আক্তার জলি ও ননদ সাহেদা হাসনিন ভোট দিয়ে বের হয়েছেন। দু’জনই কাজীপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা। তারা বলেন, আমরা প্রতিবার স্বপরিবারে ভোট দেই। ভোটার উপস্থিতি আগের থেকে অনেক কম। তবে সকালে কেমন ছিলো তা জানি না।
দুপুর ২টা বেজে ৩০ মিনিট, পশ্চিম শেওড়াপাড়া নিবাসী তারেক ইবনে হেলাল বলেন, ভোটার উপস্থিতি অনেক কম। লোকজন আসছে কিছু তবে তাতে উৎসবমুখর মনে হয়নি।
প্রথমবার ভোট দিতে এসেছেন মুবসাহান ফুয়াদ। তিনি বলেন, আগের সেই ভোটের চিত্রটা নেই। ২০০৮ সালে যখন ছোটো ছিলাম, তখন প্রতিযোগতীমূলক পরিবেশ ছিলো। এখন তার কিছুই দেখছি না। তবে যারা ভোট দিতে এসেছে সবাই সহজেই ভোট দিতে পেরেছে।
ফজলে রাব্বি। তিনি এই আসনের ভোটার না হলেও তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন ভোটকেন্দ্রে। তিনি বলেন, আমি মিরপুর-৬ এর ভোটার, ওইখান থেকে ভোট দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে এখানে এসেছি। ওইখানে যেমন কম ভোটার উপস্থিতি ছিলো, এখানেও তেমন কম দেখছি। সব জায়গায় মোটামুটি একই অবস্থা। এটা আমার চতুর্থ ভোট। গত নির্বাচনের সঙ্গে এই নির্বাচনের কোনো তুলনা করতে চাচ্ছি না। একদম সাদামাটা নির্বাচন এবার হচ্ছে।
কাজীপাড়া গিরিঙ্গিমোড় থেকে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন ৭০ বছর বয়সী প্রবীণ মহিলা পুষ্প রাণী। আমি ভোট দেয়ার জন্যই কেন্দ্রে আসছি। গেছে বছর আমি ভোট দিতে পারিনি। এজন্য আমি পুলিশকে বলছি- এই দেশের নাগরিক আমি। আমাকে ভোট দিতে দিবানা। এইটা কেমন কথা। এবার আমাকে কেউ ভয়ভীতি দেখায়নি। ভালোভাবে ভোট দিয়েছি।
উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৫ আসন। এই আসনের ভোটের মাঠে ছিলেন ৮জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মশাল প্রতীক নিয়ে লড়েছেন মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম, নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়েছেন কামাল আহমেদ মজুমদার। এ ছাড়া একতারা প্রতীকে সামছুল আলম চৌধুরী, সোনালী আঁশ প্রতীকে খন্দকার মো. ইমদাদুল হক, আম প্রতীকে নাজমা বেগম, ডাব প্রতীকে আশরাফ হোসাইন সরকার, টেলিভিশন প্রতীকে এস. এম. ইসলাম, লাঙল প্রতীকে সামসুল হক নির্বাচন করেন।