ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা এবারও ৬দিনে দু’পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়া তাবলীগের এক গ্রুপের তিন দিনের ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি। শেষ হবে ৪ ফেব্রুয়ারি।
এরপর ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে অপর গ্রুপের দ্বিতীয় পর্ব। ১১ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা। রেওয়াজ অনুযায়ী আখেরী মোনাজাত হবে প্রতি পর্বের ইজতেমার শেষদিনে। তাবলীগ জামায়াত আয়োজিত ইজতেমাকে সফল ও সার্থক করতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতির কাজ চলছে। তাবলীগের দেশী-বিদেশী মুসল্লিদের বিশাল এই আয়োজনে যাতে কোন ঘাটতি না থাকে, সেজন্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইজতেমার মুরব্বীদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশেষভাবে তা তদারকি করা হচ্ছে। সুশৃঙ্খলভাবে ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ শেষ করতে জেলা প্রশাসনেরও রয়েছে নানা উদ্যোগ।
কয়েক বছর থেকে তাবলীগের দুই গ্রুপ আলাদা করে একই জায়গায় ইজতেমা করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। সেমতে এবারো প্রথম পর্যায়ে মাওলানা জোবায়ের পন্থি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতের মাওলানা সাদ পন্থি তাবলীগ জামায়াত সদস্যরা ইজতেমা করবেন।
দুই গ্রুপের ইজতেমায় দেশীয় মুসুল্লিদের সঙ্গে বিদেশী মুসল্লীগণ এই ময়দানে সমবেত হবেন এবাদত-বন্দেগী ও আল্লাহকে রাজি খুশি করার মাধ্যমে পরকালের চির শান্তির আশায়।
দুই পর্বের ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করতে উভয় পক্ষের আয়োজকদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন হবে এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সার্থক করতে এরইমধ্যে চলছে নানা প্রস্তুতিমূলক কাজ। সারা বিশ্ব থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিগণ ইজতেমায় এসে যাতে কোন ধরণের মুসকিলে না পড়েন, সেজন্যে মাঠ ভরাট, টিনশেডের বিদেশি নিবাস তৈরি, পর্যাপ্ত পানি ও বিদ্যুত সরবরাহসহ আনুসঙ্গিক অনেক কাজ করা হচ্ছে। টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা আগের চেয়ে আরো অধিক পরিমাণের ব্যবস্থা করার দাবি রয়েছে তাদের।
ইজতেমা মাঠে কাজ করতে আসা তাবলীগ জামাতের মুসল্লি ঢাকার ব্যবসায়ী মীর আওলাদ হোসেনের সহ মুসল্লিরা জানান, ইজতেমা ময়দানের নিচু জমি ভরাট, বিশাল সামিয়ানা টানানো, রাস্তাঘাট মেরামত ও পয়ঃনিষ্কাশনের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। একইসঙ্গে চলছে ময়দানে খুঁটি পোতা, রাস্তাঘাট মেরামত ও মাঠ সমতল করার কাজ।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিপুল সংখ্যক লোকজন গাজীপুর, ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে তাবলীগ জামাতের সাথিরা ময়দানে এসে স্বেচ্ছাশ্রমে এসব কাজ করছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ- কমিশনার মোঃ ইব্রাহিম খান জানান, দেশ-বিদেশ থেকে ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও নাশকতারোধে থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ছাড়া বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট, ডগ স্কোয়াড, নৌ টহল, বিস্ফোরক দ্রব্য বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দল দায়িত্ব পালন করবে। ইজতেমাস্থলের নিরাপত্তায় আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে। ইজতেমাস্থলের নিরাপত্তায় পোশাকে ও সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতেম মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, এবারো ইজতেমায় আগত লাখ মুসল্লির জন্য অন্যান্য বারের মতো আলাদা করে তৈরী করা হচ্ছে চটের ও টিনসেডের আলাদা ছাউনি। দুই গ্রুপের আলাদা সময়ে ইজতেমা সম্পন্ন করতে যাতে কোন সমস্যায় না পড়তে হয় তা মাথায় রেখেই চলছে প্রস্তুতি কাজ। ইজতেমা শুরুর আগেই সকল ধরনের প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন হবে।