ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরসহ মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরোধিতা ও সমালোচনা করায় অব্যাহতি পাওয়া ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়ের নেতৃত্বে ১০ থানার ৬৭১ নেতা-কর্মী দল ছা[ড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে গণপদত্যাগ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠান। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব ৩০০ আসন থেকে প্রার্থী মনোনীত করার পর মাত্র ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ার বিনিময়ে গোটা পার্টিকেই বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। আর সমঝোতা করে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ মাত্র ১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে এমপি হয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবেদিত প্রাণ নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান পার্টির তৃণমূল পর্যায় থেকে পার্টিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের পদত্যাগের দাবি ওঠে। পার্টির এই দুরবস্থার মধ্যেও চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতার নিকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করে পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতৃবৃন্দকে একের পর এক অব্যাহতি দিয়ে চলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এমতাবস্থায় আমরা এরশাদপ্রেমিক নেতা-কর্মীরা জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন তার বিপর্যস্ত সংগঠনে অবস্থান করে প্রাণপ্রিয় নেতা পল্লিবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ধ্বংস দেখতে চাই না। তাই আমরা জি এম কাদেরের সংগঠন থেকে আজ গণপদত্যাগের ঘোষণা করছি। একই সঙ্গে আপনাদের কাছে এই অঙ্গীকারও করে রাখছি, অল্প সময়ের ব্যবধানে আমরা পল্লিবন্ধু এরশাদের চেতনা, প্রেরণা ও নীতি-আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা জানান, মোহাম্মদপুর, আদাবর, শেরেবাংলা, হাতিরঝিল, পল্লবী, মিরপুর, বাড্ডা, রূপনগর, দারুস সালাম ও ক্যান্টনমেন্ট থানার ৬৭১ জন নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব দীর্ঘদিন ধরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অন্যায়, অপরাধ করে আসছেন; কিন্তু তাতে কোনো প্রতিবাদ করা যাবে না। জি এম কাদের মনে করে জাতীয় পার্টি নিজের মুদির দোকান। এখানে কিছু লোক সারা দিন দোকানদারি করে, সন্ধ্যার পর তাকে হিসাব দেয়, হিসাব নিয়ে তিনি চলে যান।’
দলের মহাসচিবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সুতা এখন মহাসচিবের হাতে, চেয়ারম্যান লাটিমের মতো ঘুরেছেন। এভাবে কত দিন ঘুরবে আল্লাহ জানেন। এই দলটাকে উনি শেষ করে ফেলেছেন। আমি চেয়ারম্যানকে অনেকবার বলেছি, এই বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে আসেন। তিনি বলেছেন আমি পারব না।’
চেয়ারম্যানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে উনি একটা সভা-সমাবেশ করেন নাই। প্রোগ্রাম করেন নাই। তারা যোগ্য না। তাই তাদের পদত্যাগ চাই। আমরা এরশাদের ঝান্ডা নিয়ে এগিয়ে যাব। দল এরশাদের, আপনার না। আপনার এই দল করার যোগ্যতাও নাই।’