ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি নেতারা বলেছেন, এই সরকার দেশের জনগণের নয়। ভারত, চীন, রাশিয়ার সরকার এটি। ক্ষমতা থেকে তাদের বিদায় করতেই হবে। নির্বাচনে ৭ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দেয়নি। জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে কালো পতাকা মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা এসব কথা বলেছেন। দেশের সব মহানগরে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে টানা ৯০ দিন পর রাজপথের কর্মসূচিতে ফিরল বিএনপি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সংসদ বাতিলসহ এক দফা দাবি আদায়ে ঘোষিত দু’দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মিছিল হয়। এতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি দেশের সব জেলা ও মহানগরের অন্তর্গত থানা-উপজেলা ও পৌরসভায় কালো পতাকা মিছিল হবে। ওই দিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে।
বিএনপি নেতারা বলেন, অবৈধ এই সরকারকে তারা মানতে বাধ্য নন। ৭ জানুয়ারি ৭ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট দেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের ৭ ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। অন্যদিকে তারেক রহমান ৯৩ শতাংশ মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এটি ভোটের লড়াই, গণতন্ত্র এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে চান তারা। জিনিসপত্রের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় মানুষ দিশেহারা। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। ১০ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। আজ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে রাজপথে নেমেছেন তারা। দেশ স্বাধীন হয়েছিল কারও কাছে মাথা নত করতে নয়। দিল্লির শাসন দিয়ে কোনোদিন বাংলাদেশ চলেনি। আওয়ামী লীগ ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়ায় দেশ শাসন করছে। তারা দেশে বিভাজন তৈরি করেছে।
কর্মসূচি পালনে দুপুরের আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টন এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেক নেতাকর্মী কর্মসূচিতে অংশ নেন। সবার হাতে কালো পতাকা ছাড়াও কারাবন্দি বিভিন্ন নেতাকর্মীর প্ল্যাকার্ড বহন করতে দেখা গেছে। নয়াপল্টন থেকে মিছিল শুরু হয়ে কাকরাইল, মালিবাগ হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনের অনুরোধে তা পরিবর্তন করা হয়। সমাবেশ শেষে নয়াপল্টন থেকে মিছিল শুরু হয়ে নাইটিংগেল মোড় ঘুরে নটর ডেম কলেজের সামনে দিয়ে আরামবাগ মোড় হয়ে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে এসে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ছাড়াও দলটির নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।