ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জি এম কাদের, চুন্নুকে ‘অব্যাহতি’ দিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে ‘অব্যাহতি’ দিয়েছেন।
আজ রোববার গুলশানের বাসভবনে মতবিনিময় সভার পর বিজ্ঞপ্তিতে এই দায়িত্ব নিলেন রওশন। যদিও জাপার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, রওশন এরশাদের ক্ষমতা নেই চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে অব্যাহতি দেওয়ার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষকের ক্ষমতাবলে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন রওশন। কাজী মামুনুর রশীদের নাম জাপার মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করেছেন। জি এম কাদের যেসব নেতাদের অব্যাহতি, বহিস্কার করেছেন, তাদের স্বপদে বহালের কথা বলেছেন বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরোধীরা রওশন এরশাদকে সামনে রেখে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন। এরই অংশ হিসেবে আজ রোববার দলের নেতাদের মতবিনিময় সভা ডাকেন রওশন।
নির্বাচনের আগে থেকেই জাপায় টানাপোড়েন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভরাডুবির পর তা বেড়েছে। স্ত্রী শেরিফা কাদেরের জন্য আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন ছাড় পাওয়ার পরই জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন– এ অভিযোগ তুলে নেতৃত্বের সমালোচনা করে কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদসহ একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা পদ হারিয়েছেন।
ভোটের আগে দলটির একাধিক প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যান। তাদের অভিযোগ ছিল, নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকারের কাছ থেকে টাকা পেয়েছেন জি এম কাদের। ভোটে নামিয়ে প্রার্থীদের খবর নেননি। গত নির্বাচনে জামানত হারানো শেরিফা কাদের সংরক্ষিত আসনে দ্বাদশ সংসদে যাবেন– এ খবরে বিরোধিতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বাদ পড়া প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলন করে জাপা মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রায় ৭০০ নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার জাপার বনানী কার্যালয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে এজেন্ট দেওয়ার মতো লোক পাওয়া যায়নি। পদত্যাগের জন্য এত নেতাকর্মী কোথা থেকে এলো? শেরিফা কাদেরের আসনে এজেন্ট পাওয়া যায়নি, সেখানেই পদত্যাগের জন্য শফিকুল ইসলাম এত নেতাকর্মী কীভাবে পেলেন? বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করব। যারা পদত্যাগ করতে মিছিল নিয়ে গেছে, তাদের মাত্র সাত-আটজনকে চিনি। জাতীয় পার্টিতে এত কর্মী ছিল, সেটাও জানলাম।
দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে জি এম কাদেরের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেননি রওশন এরশাদ ও তাঁর ছেলে রাহগীর আল মাহি এরশাদ সাদ। মনোনয়ন পাননি রওশনের অনুসারীরাও। ভোটের পর যেসব নেতা জি এম কাদের বিরোধী হয়ে উঠেছেন, তারা চান শেরিফা কাদের নন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হবেন রওশন। তিনিই হবেন বিরোধীদলীয় নেতা। এর মাধ্যমে ভারসাম্য থাকবে।