ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটারবিহীন সরকার জানে, কোনো দিন তাদের ভোটারদের সামনে যেতে হবে না। তারা তো ক্ষমতায় আছে বন্দুকের জোরে। জনগণ তাদের নির্বাচনী সার্কাস প্রত্যাখ্যান করার জনগণের ওপর বিদ্যুতের মিটার ভাড়া দ্বিগুণ করে এই জুলুম করছে।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শাজাহান ওমর যে মামলায় জর্জ কোর্ট থেকে জামিন পান। সেই মামলায় বিএনপি মহাসচিব সহ অসংখ্য নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। তাদের জামিন দেয়া হয় না। অথচ একজন শাজাহান ওমরকে কেনার পর তার সব কিছু মাফ হয়ে গেছে। কৃষিমন্ত্রীর কথাই সত্য হয়েছে। এখন টিআইবির মতো আব্দুর রাজ্জাক সাহেবকে কি বিএনপির দালাল বলবেন ওবায়দুল কাদের সাহেব?
তিনি আরো বলেন, জনগণ প্রত্যাখাত একদলীয় ডামি সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা পরই জানা গেল আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ভাড়া ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মিটার চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় সমন্বয় করতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মিটার ভাড়া এক লাফে দ্বিগুণ বৃদ্ধি ৭ জানুয়ারি নীরবে সার্কাস দেখার শাস্তি হিসেবে জনগণের ওপর ধার্য করা হয়েছে। এমনিতেই আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসের সরবরাহ মারাত্মক অবনতি হয়েছে। বাসাবাড়িতে দিনে-রাত অধিকাংশ সময়ে গ্যাস থাকে না। অথচ অবৈধ সরকার নানা কৌশলে গ্যাস ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা চুষে নিচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে ফেলে মিটার ভাড়া দ্বিগুণ করা সরকারের গণশত্রু চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জনগণকে বন্দুকের নলের মুখে দূরে ঠেলে ক্ষমতা দখলে রাখার একমাত্র লক্ষ্য গোটা দেশটাকে লুণ্ঠনের অভয়ারণ্য বানানো। আর এর ফলশ্রুতিতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অরাজকতার কালো আঁধারে আচ্ছন্ন। ভয়াবহ ডলার সঙ্কটের কারণে রফতানি প্রবৃদ্ধিতে ধস নেমেছে। তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে নগদ সহায়তা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবৈধ ডামি সরকার। এমনিতেই বায়ারদের কাছ থেকে পোশাকের অর্ডার অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ছাড়া চামড়া, পাটজাত পণ্য, এগ্রো প্রসেসিং পণ্যে নগদ সহায়তা অনেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এ সমস্ত পণ্যের রফতানি চরমভাবে হ্রাস পাবে।
তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার কখনোই জনকল্যাণমুখী হতে পারে না। এরা অবাধ লুণ্ঠনের যে নজির তৈরি করেছে তা পৃথিবীতে বিরল। বেপরোয়া দুর্নীতি আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুযোগ দিয়ে এরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা গড়ে তুলেছে। এদের দিয়েই প্রবল জনমতকে দমন করা হয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির ওপর নামিয়ে আনা হয় এক ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। দলীয় ক্যাডার, সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেটবাজদের ভরণ-পোষণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের কোষাগার শূণ্য করা হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নের নামে যেভাবে হরিলুট হয়েছে সেটি পূরণ করতেই এরা রফতানি খাত থেকে তহবিল কমাচ্ছে।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, এখন টিআইবি বলছে এই দুর্নীতি বর্তমানে আরো অবনতিশীল হয়েছে। দখলদার আওয়ামী সরকার শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দুর্নীতিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবারের শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতর্কিত হামলা করে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, কালো পতাকা মিছিলকে কেন্দ্র করে শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার, আহত ৭০ এবং ছয়টি মামলা দিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, বিলকিস জাহান শিরিন প্রমুখ।