DMCA.com Protection Status
title="৭

‘বাবা বাসায় আসো না কেন? কবে বাসায় আসবা?

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ‘বাবা বাসায় আসো না কেন? তোমাকে খুব মিস করি। কবে বাসায় আসবা? তোমার কোলে উঠবো।’- এভাবেই আত্মগোপনে থাকা সাজাপ্রাপ্ত নেতাদের ছোট বাচ্চারা বাবার কাছে আকুতি জানায়। বাচ্চাদের এমন আকুতি কতটা কষ্টের তা একমাত্র বাবারাই অনুভব করতে পারে।

যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। এই সময়ে একবারের জন্যও পরিবারের কাছে যেতে পারেননি টুকু। তিন মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। তার স্ত্রী সায়মা পারভীন সিমিমি বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশের হামলায় পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন টুকু। তখন থেকে বাসায় ফেরেননি একবারের জন্যও। বাচ্চারা বাবাকে খুব মিস করে। সাংঘাতিক রকম মিস করে। ফোনে কথা হলে বাচ্চারা ফোন ছাড়তে চায় না। বাবাকে বলে বাবা বাসায় আসোনা কেন? কবে আসবা বাসায়। তাড়াতাড়ি আসো। তোমার কোলে উঠবো। তাছাড়া বাচ্চারা বাবার খুব ভক্ত।’

তিনি বলেন, ‘যারা জেলে আছেন তারা মাঝেমধ্যে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন। দেখা করতে পারেন। জেলের বাইরে থাকার পরও আমরা দেখা-সাক্ষাত করতে পারছি না। বাচ্চাদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছি আমরা।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল। গত তিন মাসে ৫টি মামলায় ১৫ বছর তিন মাসের সাজা হয়েছে তার। দীর্ঘদিন ধরে নিজ বাসায় যেতে পারছেন না। আজ এখানে তো কাল অন্যখানে রাত কাটাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “বাচ্চারা খুব মিস করে আমাকে। ফোন করলে বাসায় যেতে বলে। সাদা কাগজে লিখেছে- ‘বাবা প্লিজ কাম এন্ড প্লে উইথ আস’। এরপর তার ছবি তুলে মোবাইলে মেসেজ পঠিয়েছে। কিন্তু গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়ানোর কারণে বাচ্চাদের অনুরোধ রাখতে পারছি না। কবে নাগাদ বাসায় ফিরতে পারবো তা বলতে পারছি না। এক ধরনের ফেরারি জীবন-যাপন করছি।”   

এছাড়া ৫টি মামলায় ১৩ বছর ৬ মাস সাজা হয়েছে যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মামুন হাসানের। ৫টি মামলায় ১৭ বছর ৮ মাসের সাজা হয়েছে যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারের। একটি মামলায় দুই বছরের সাজা হয়েছে বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসানের।

বিএনপি’র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের ২৭ জুলাই থেকে সারা দেশে ২৭ হাজার ৪৯৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এই সময়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১ হাজার ১৭৫টি। এসব মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি। এ ছাড়া ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৪ মামলায় বিএনপি’র ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৯২ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত পাঁচ মাসে শতাধিক মামলায় ১ হাজার ৬৮৭ জন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!