ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সারাদেশে বেপরোয়া আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ। একের পর এক অপকর্ম করে চলেছে দলটির নেতাকর্মীরা। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মা-মেয়ে ধর্ষণকান্ড, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গৃহবধু ধর্ষণের ঘটনার পর এবার কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতার মারপিটে নিহত হয়েছেন এক ব্যবসায়ী।
কুড়িগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভী কবির বিন্দু ও তার সহযোগীদের মারপিটে শরিফুল ইসলাম সোহান নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হামলার শিকার সোহানকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা শহরের খলিলগঞ্জ এলাকার ‘অভিনন্দন’ কনভেনশন সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শহরের ‘অভিনন্দন’ কনভেনশন সেন্টারের সামনে একটি জিপ গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। এসময় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা সিয়াম ও রিয়াদের দ্রুতগামী একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিপের পাশে পড়ে যায়। এ খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার সহযোগীরা ঘটনাস্থলে এসে জিপে থাকা শরিফুল ইসলাম সোহানকে মারপিট করেন। এ সময় শরিফুল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওই জিপে করে ছাত্রলীগ নেতারা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ব্যবসায়ী সোহানের বন্ধু খন্দকার রেদোয়ান মাহমুদ বলেন, আমরা সোহানসহ তিনজন বন্ধু শহরের অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারে সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎই একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হাড়িয়ে আমাদের গাড়ির সামনে এসে ছিটকে পরে। তখন আমরা আহত মোটরসাইকেল আরোহী দুজনকে উদ্ধার করে একটি অটোতে করে হাসপাতালে পাঠাই দেই। পরে আমরা শহরের দিকে আসার সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দুরসহ তার দলবল আমার জীপ গাড়িকে পথ রোধ করে। কিছু বুঝে উঠার আগে আমাদের উপর হামলা চালায়। তারা বলতে ছিলেন আমরা নাকি মোটরসাইকেলকে সাইড দেই নাই। এ কথা বলে আমার বন্ধু সোহানকে মারতে শুরু করে তারা। এতে গুরুত্বর আহত হয় সোহান।
তিনি আরও বলেন, পরে আমার বন্ধু সোহান আহত হলে ছাত্রলীগ নেতা নিজই আমাদের নামিয়ে দিয়ে গাড়িতে করে তাকে হাসাপাতাল নিয়ে আসে। পরে হাসপাতালের সামনে এসেও ছাত্রলীগ নেতা ও তার দলবল আবারও সোহানকে মাইর শুরু করে। আমরা এসে আহত সোহানকে হাসাপাতালে নিলে চিকিৎকরা তাকে মৃত ঘোষনা করে।
নিহত শরিফুল ইসলাম সোহান ঘোষপাড়া হাটিরপাড় এলাকার মৃত আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে এবং জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মোটর মালিক সমিতি ও ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।