ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরি জাবেদের লন্ডনে ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি নিয়ে আবারো জোর আলোচনা চলছে। রবিবার ব্লুমবার্গ এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তির ইউকে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। তার এই সম্পত্তির পরিসংখ্যান যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউস কর্পোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকী চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ব্লুমবার্গ বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের একটি ব্যক্তিগত আবাসিক রাস্তায় একটি সম্পত্তি রয়েছে যা ২০২২ সালে ১১ মিলিয়ন পাউন্ডে (১৩.৮ মিলিয়ন ডলার) এ সর্বশেষ বিক্রি হয়েছিল। রিজেন্টস পার্ক এবং লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড থেকে হাতের নাগালে লন্ডনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ এলাকাগুলোর একটিতে সাদা টাউনহাউসের সারি অবস্থিত।
বিপননের জন্য তোলা একটি বাড়ির ছবিতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত জানালা, বেশ কয়েকটি তলা জুড়ে একটি ঘুড়নো সিঁড়ি, একটি সিনেমা এবং একটি জিম দেখা যায়। এরকম একটি সম্পত্তির মূল্য ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি। বাড়িটি বাংলাদেশের একজন রাজনীতিকের মালিকানাধীন। অথচ বাংলাদেশের নাগরিক এবং সরকারী কর্মচারীরা বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারে না। কর্পোরেশনগুলোও নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ না করে অর্থ প্রেরণ করতে পারে না।
উল্লেখ্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ৩৫০ টিরও বেশি সম্পত্তির ইউকে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।
তার এ সম্পত্তি সেন্ট্রাল লন্ডনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকাতেও রয়েছে। টাওয়ার হ্যামলেটসে বৃহত্তম বাংলাদেশী সম্প্রদায়ের আবাস। এছাড়াও লিভারপুলে ছাত্রদের আবাসনের জন্য গড়া হয়েছে। ইউকে প্রপার্টির প্রায় ২৫০ টির বেশি স্থাপনা বিশ্লেষণ দেখায় যে প্রায় ৯০ ভাগ কেনার সময় নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে এ নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা সবিস্তারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ব্লুমবার্গ তার প্রতিবেদনে বলেছে, মন্ত্রীর দুর্নীতির এই প্রক্রিয়া তখনই ঘটে যখন যুক্তরাজ্য সরকার বিদেশী সম্পত্তির মালিকানাকে আরও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।