ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি নব্বইয়ের পরে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে গেছে। ক্ষমতা থেকে সরে আসার পর পরজবীবী ছিলো। তবে এখন সেটাও সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছি। এখন হয়েছি গৃহপালিত রাজনৈতিক দল। এটা বাস্তবতা। এটা করা হয়েছে, সরকারি দল থেকে। দলের ভেতরে সরকারের এজেন্ট ঢুকিয়ে এটা করা হয়েছে।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘দলকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসেন। দরকার হলে পরজীবী থাকব। পরজীবী থেকে আমরা স্বনির্ভর হবো।’
নিজের জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে দলীয় কার্যালয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘ক্ষমতার বাইরে থাকলে আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলো টিকতে পারে না। যারা ক্ষমতায় থাকে তারা বিভিন্নভাবে জুলুম-নির্যাতন, বঞ্চনা করে আমাদের রাজনীতি করতে দেয়নি। ফলে দলে যারা ছিলেন, আস্তে আস্তে দল থেকে চলে গেছেন। অনেক লোক দল করতে আসেন নিজের স্বার্থের জন্য। তারা দলের স্বার্থও দেখে না, দেশ ও জাতির স্বার্থ তো দেখেই না। সেসব লোক আস্তে আস্তে সরে গেছে।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে মহাজোট করার পর থেকে পরজীবী হয়ে গেছি। এই পরজীবীটা বড় সুযোগ ছিল। বড় দুটি রাজনৈতিক শক্তির অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। সেই অল্প ভোটটি আমরা দিতে পারতাম সব আসনে। আমাদেরকে নেওয়ার জন্য, আমাদেরকে পরজীবী করার জন্য প্রতিযোগিতা ছিল। সেটার জন্য আমাদের একটা বার্গেনিং পাওয়ার ছিল। আমরা বার্গেনিং করে অনেক কিছু আদায় করতে পারতাম। সেটা ছিল আমাদের রাজনৈতিক শক্তি।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে আমরা সেটা হারিয়ে ফেলেছি। আগে পরজীবী হলেও আমাদের একটা চয়েস ছিল, আমরা এখানে যেতে পারি, আমরা আরেকখানেও যেতে পারি। সেটাই ছিল আমাদের বার্গেনিং পয়েন্ট; তোমরা যদি আমাদেরকে ভালোভাবে না দেখো, আরেকজনের কাছে যাব। সে যদি ভালোভাবে না দেখে তোমার কাছে আসব। এখন আমরা বন্দি হয়ে গেছি, একজনের কাছে ছাড়া যেতে পারব না। দল ভাঙতে সরকার মদদ দিচ্ছে। আইন-কানুনে মাধ্যমে আমাদের লাঙ্গল-টাঙ্গল সব নিয়ে যাওয়া হবে- এই ধরনের ধামকি দেওয়া হবে। তার ফলে, দল বাঁচাব না রাজনীতি বাঁচাব? এই সমস্যা জাতীয় পার্টি সব সময় বহন করে যাচ্ছে। কারণ আমাদের দুর্বলতা। কারণ, আমরা লোভ-লালসা থেকে দুরে থাকতে পারি না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, দলকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে গৃহপালিত থেকে বেরিয়ে আসেন। দরকার হলে পরজীবী থাকব। যারা গৃহপালিত হওয়ার জন্য দায়ী, তাদের বর্জন করতে হবে।