DMCA.com Protection Status
title="৭

পিলখানা হত্যা, ১৫ বছর পরও বিচারের মিথ্যা আশ্বাস আওয়ামী লীগের

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রতি বছরের মত এবারও পিলখানা সদর দপ্তর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পেছনের ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার আশ্বাস দিয়েছে গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ।  পিলখানার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের খুঁজে বের করা হবে।

আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পিলখানায় অনেক বড় হত্যাযজ্ঞ হয়েছিল। অনেকেই এখানে জড়িত ছিল। আপনারা দেখেছেন প্রাথমিক বিচার হয়েছে। চূড়ান্ত বিচার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে।’

রোববার রাজধানীর বনানী কবরস্থানে পিলখানায় নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রপতির পক্ষে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা শ্রদ্ধা জানান।

দলের পক্ষ থেকে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফারুক খান বলেন, ‘আমরা জানি যে বেগম জিয়া সেদিন ঘটনার কিছুক্ষণ পূর্বে তাঁর বাসা থেকে একটি গাড়িতে করে কোনো গাড়িবহর ছাড়াই বের হয়ে যান। এতে প্রমাণিত যে তিনি জানতেন ঘটনা ঘটবে। এ ঘটনার বিচার যেন সুষ্ঠুভাবে হয়, সে জন্য কাজ চলছে। ’

শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছর হয়ে গেছে, পরিবারগুলো বিচার না পাওয়ার শঙ্কার কথা বলছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেন অতি দ্রুত সম্পন্ন হয়, আমরাও সেটাই আশা করি।’

বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। এ সময় বেশ কিছু সাবেক সেনা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।।

পরে ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা আজও জানি না, এ ঘটনার পেছনের ইতিহাস কী। আমরা সেই শোক বয়ে বেড়াচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, বাংলা ভাষায় একটা কথা আছে, ‘বিচারের বাণী আজ নিভৃতে কাঁদে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচার যদি বিলম্ব হয়, সেই বিচারের কোনো মূল্য থাকে না।

ফারুক খানের মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মঈন খান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিপর্যায়ে কোনো কথা বলতে চাই না।’ বিচারকাজে হস্তক্ষেপ করা যুক্তিযুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমি একটি কথাই বলি, বিচারকার্যে হস্তক্ষেপ করা যুক্তিযুক্ত নয়। আমাদের বিচারকেরা তাঁদের নীতিতে অবিচল থেকে ন্যায়বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি অতি দ্রুত সুরাহা করবেন। ১৫ বছর পরে সেই প্রত্যাশা করি।’

আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘এ ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, এ ঘটনা যবনিকার পেছনে কী ছিল, আজকে বাংলাদেশের মানুষ সেই সত্য জানতে চায়।’ মামলার বিচারকার্য কেন বিলম্ব হচ্ছে, তা জানতে চান তিনি।

তিনি বলেন, ৭৪ জন সেনা হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া আজও ঝুলে আছে, কেন ঝুলে আছে? সে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মঈন খান আরও প্রশ্ন করেন, যাদেরকে কারাগারে রাখা হয়েছে, এখনও কেন তাদেরকে বিনাবিচারে কারাগারে রাখা হয়েছে।?

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দেড় মাসের মাথায় পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত হয়েছিলেন বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের ৫৭জন কর্মকর্তা। ওই ঘটনায় আরও নিহত হয়েছিলেন জেনারেল শাকিলের স্ত্রীসহ ১৭জন বেসামরিক ব্যক্তিও।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!