DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

রকেট গতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে: রিজভী

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম রকেট গতিতে বেড়েই চলছে এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ।
 
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
 
রিজভী বলেন, বিতর্ক সৃষ্টি করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে। আওয়ামী লুটেরা চক্রের কারণে ডামি সরকার সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আওয়ামী বাজার সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে ডামি সরকারের ডামি মন্ত্রীরা। অথচ ডামি প্রধানমন্ত্রী নির্লজ্জভাবে বিএনপির উপর দায়ভার চাপিয়ে দেয়ার পর নেত্রীর অনুসরণে ওবায়দুল কাদের এবং হাছান মাহমুদ সাহেবরা একই সুরে গান গাইছেন। সরকারের কাজ অভিযোগ তোলা নয়। বাজার সিন্ডিকেট করে যারা জনজীবনে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরী করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
 
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ১লা মার্চ থেকে আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষনা দিয়েছেন এমন জানিয়ে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জনজীবনকে ভয়াবহ দুর্বিষহ করতেই গণবিরোধী সরকার সর্বনাশা পথে হাঁটছে। পবিত্র রমজান মাস সমাগত। সিয়াম-সাধনার এই মাসে দেশের জনগণ একটু স্বন্তি চায়, কিন্তু প্রতিদিন রকেট গতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।  
 
"অনাহার, অর্থ কষ্ট আর ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ পরিবার নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। গতকাল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় সায়মা বেগম (৩৫) তার মেয়ে ৯ বছরের ছাইমুনা এবং সাত বছরের ছেলে তাওহীদকে নিয়ে ঋণের জ্বালা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। এই মৃত্যুর দায় সরকার এড়াতে পারে না।"
 
 ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী খোদ রাজধানী ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে একটি স্বাধীন দেশের ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকষ সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, একটি স্বাধীন দেশের ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকষ সামরিক অফিসারসহ ৭৪ জন নিরপরাধ মানুষের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের পরিবারের নারী ও শিশুদের ওপর বর্বর অত্যাচার করা হয়েছিল। কেবল বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, এমনকি বিশ্বের ইতিহাসেও এই নারকীয় বর্বরতা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এটি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সঙ্গে জড়িত। এমন একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আওয়ামী লীগ দেশ এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে মনুষ্যত্বহীন ছেলেখেলা শুরু করেছে। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনার ১৫ বছর পর এসে 'ডামি সরকারে'র মন্ত্রীরা বলছেন, ঘটনার সঙ্গে নাকি বিএনপি জড়িত! একটি সরকার কতটা দায়িত্বহীন হলে এ ধরণের অভিযোগ করতে পারে। সব ঘটনা যদি বিএনপিই করে, তাহলে ক্ষমতা দখলকারী শেখ হাসিনা কি করছেন? লুটপাট, দুর্নীতি আর টাকা পাচার করা?
 
"২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বিএনপি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে তারাই ষড়যন্ত্র করে বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল। চৌকষ অফিসারদের হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনার পেছনে বিএনপি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। " পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ষড়যন্ত্র তারাই যে করেছে তা স্পস্ট। সেদিন পিলখানায় কি ঘটেছিল, কারা ঘটিয়েছিল, কেন ঘটেছিল, ঘটনার নেপথ্যের নায়ক কারা, কারা ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে-সবকিছুই আওয়ামী ঠুসি পরা হাছান মাহমুদ স্বীকার না করলেও দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে সত্য ঘটনা গতকালও প্রকাশিত হয়েছে।
 
তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষী, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে রাখার আওয়ামী ষড়যন্ত্র নতুন নয়। সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে রাখতে স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর প্যারালাল রক্ষীবাহিনী তৈরী করা হয়েছিল। দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে আওয়ামী লীগ এবং তাদের দেশি বিদেশী দোসররা সেনা কর্মকর্তা এবং সেনা সদস্যদেরকে মুখোমুখি করে দিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। তবে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার ঐকবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ এবং দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আওয়ামী এবং তাদের দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া হয়। তবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মহল বিশেষের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্য পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার নির্মমতাকে প্রশ্রয় দেয়া। তার বক্তব্য জনমনে অসীম হতাশা ও তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
 
"বিএনপি বিদেশিদের কাছে শুধু নালিশ করে" আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন,   
২০০১ থেকে তারা কি করেছেন। শুধু দেশে নয় বিদেশেও গিয়ে নালিশ করেছেন তারা। আর আমরা যে নালিশ করেছি সেটি উনি কি করে জানলেন, উনি কি কোন গোপন কোন যো যন্ত্র ব্যবহার করেন নাকি? মনে হয় ওবায়দুল কাদের বিএনপির বিকল্প স্থায়ী কমিটির সদস্য।
 
"বিএনপিকে খেসারত দিতে হবে" এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন,  খেসারত তো আওয়ামী লীগকে দিতে হবে , এরশাদের সাথে ভোট গিয়ে সেটিই প্রমাণ করেছে। তাদের মিথ্যাচারের পরিণয় ভোগ করতে হবে।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড সাহিদা রফিক, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ , মৎস্যজীবি দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, সাবেক নেতা অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!