ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জুয়া খেলায় ঝগড়ার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বিরাশার গ্রামে গত দু’দিনে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অর্ধশত। এ সময় বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি বিদেশি রিভলবার ব্যবহার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫ রাউন্ড গুলি, একটি বিদেশি পিস্তলসহ ১ জনকে আটক করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার বিরাশার গ্রামের ইরি স্কিমের কাছে জুয়া খেলার সময় দু’দল জুয়াড়ির মধ্যে ঝগড়া বাধে। এর জের ধরে ওইদিন রাতে গ্রামের মজু মিয়ার ছেলে আল আমিন মোকিত মিয়ার ছেলে আনোয়ার (২৫)কে মারধর করে। এরপর থেকে গ্রামের সবজী ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া, সাদ্দাম মেম্বার ও কাশেম মাস্টারের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা তাজ মো. ইয়াছিন ও পৌর কাউন্সিলর মিজান আনসারীর পক্ষের লোকজন দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গতকাল সকালে বাবুলের পক্ষের একে ছেলেকে মারধর করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এরপর আবারো দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে অর্ধশত লোক আহত হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করা হয়। এ সময় ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। আগুন দেয়া হয় বাড়িঘরে।
নাটাই উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়ীদ জানান, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের শুরু। সোমবার থেকে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্যে দু’পক্ষের লোকজনের পেছনে দৌড়াচ্ছেন। কিন্তু লাভ হচ্ছে না। পুলিশ জানায়, ঘটনার পেছনে এলাকার নেতৃস্থানীয় লোকজনের মদদ রয়েছে। তারা প্রকাশ্যে না এলেও তাদের হুকুমে একপক্ষ আরেকপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা করছে। বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। মূলত দু’পক্ষের নেতৃস্থানীয় লোকজনের উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে গ্রামের সুলতান ও হোসেন মিয়ার মধ্যে শহরের আনন্দবাজারের মাংস পট্টিতে একটি দোকানের বিক্রি ও দখল নিয়ে বড় ধরনের ঝামেলা হয়। এ ছাড়াও আরও নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের এই দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছে। সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন জানান সোমবার ঘটনার পর থেকে বার বার দু’পক্ষের নেতৃস্থানীয় লোকজনকে আমরা নির্বৃত্ত থাকার জন্য বলেছি। বলেছি ঘটনা যেটুকু হয়েছে মামলা নিয়ে এর বিচারের ব্যবস্থা করবো। একেক জনকে ১০ বার করে ফোন দিয়েছি। বলেছি যার যার পক্ষের লোকজনকে নির্বৃত্ত করতে। কিন্তু এ লক্ষ্যে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। বরং যার যার পক্ষকে উস্কানি দিয়েছে। ওসি আরও জানান, দাঙ্গাবাজরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করার চেষ্টা চালিয়েছে। ককটেল, পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আমরা হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হই। ধৃত মো. জসিম (৩৫) বিরাশার গ্রামের বড় গোষ্ঠীর নুরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।