DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

জলদস্যুর কবলে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ, নিয়ে যাচ্ছে সোমালিয়ায়

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি পতাকাবাহী একটি জাহাজ সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে। জাহাজটিতে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু রয়েছেন বলে জানা গেছে। জাহাজটি তারা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর জানিয়ে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডর মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত পৌনে ৯টায় বলেন, আমরা যোগাযোগ রক্ষা করার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জাহাজ মালিকদের পক্ষ থেকেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশল নিয়ে এগুতে হচ্ছে। আমরা সবার আগে আমাদের নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। যতটুকু জানতে পেরেছি সবাই ভালো আছে। জাহাজের মধ্যে সবাই যার যার মতো মুক্তভাবে আছে। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো শর্ত আমরা পাইনি। মহাপরিচালক বলেন, আমরা জাহাজটির গতিবিধি লক্ষ্যরাখার চেস্টা করছি।

মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরের উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে কয়লাবাহী জাহাজটি জলদস্যুরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। জাহাজটি চট্টগ্রামের শিল্পপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকাধীন বলে জানা গেছে। এসআর শিপিং রড প্রস্তুতকারক কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।


এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহরুল করিম বলেন, জাহাজটিতে থাকা নাবিকদের সঙ্গে আজ দুপুরে যোগাযোগ হয়েছে। তারা সবাই নিরাপদ আছেন বলে জানিয়ে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাচ্ছিল। কিন্তু সোমালিয়ান জলদস্যুরা দুদিন আগে এমভি আবদুল্লাহর গতিপথ পরিবর্তন করে সোমালিয়ার দিকে ঘুরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে।

তিনি জানান, জলদস্যুরা কোনো ধরনের মুক্তিপণের ব্যাপারে এখনো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জাহাজে থাকা ক্রুদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এস আর শিপিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুর দেড়টার দিকে তাদের জাহাজটি দস্যুদের কবলে পড়ার খবর পান। জাহাজটির ধারণক্ষমতা ৬৮ হাজার টন। এটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে আরব আমিরাতের হামিরিয়া বন্দরে যাচ্ছিল।

মিজানুল ইসলাম জানান, দস্যুদের পক্ষ থেকে এখনো তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। কোম্পানির পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। যাতে সব নাবিক ও ক্রু সুস্থভাবে উদ্ধার হতে পারে।

জাহাজটিতে জলদুস্যদের আক্রমণের সময় নাবিক ও ক্রুদের ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক জলদস্যু জাহাজের রেলিংয়ের সঙ্গে হুক লাগিয়ে দড়ি বেঁধে জাহাজে উঠছে। ওই জলদস্যুর পিঠে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র রয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাহাজটিতে অন্তত ৫০ জন অস্ত্রধারী দস্যু রয়েছে। জাহাজটি তারা সোমালিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বাল্ক ক্যারিয়ার এই জাহাজের দৈর্ঘ্য (এলওএ) ১৮৫ দশমিক ৭৪ মিটার ও প্রস্থ ৩০ দশমিক ৪ মিটার।

আব্দুল্লাহ জাহাজের মাস্টার আব্দুর রশিদের পাঠানো তালিকা অনুসারে এই জাহাজে যারা রয়েছেন তারা হলেন, মাস্টার রশিদ নিজে, যার বাসা চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের চিফ অফিসার খান মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ, চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অফিসার চৌধুরী মোজাহেরুল ইসলাম, ফরিদপুরের তৃতীয় অফিসার ইসলাম মোহা. তারেকুল, টাঙ্গাইলের ডেক ক্যাডেট হোসাইন মোহাম্মদ সাব্বির, নওগাঁর চিফ প্রকৌশলী শাহিদুজ্জামান এ এস এম, খুলনার দ্বিতীয় প্রকৌশলী ইসলাম মো. তৌফিকুল, নেত্রকোনার তৃতীয় অফিসার উদ্দিন মো. রোকন, চট্টগ্রামের চতুর্থ প্রকৌশলী আহমেদ তানভীর, লক্ষ্মীপুরের ইঞ্জিন ক্যাডেট খান মো. আইয়ুব, ফেনির ইলেকট্রিশিয়ান উল্লাহ ইব্রাহিম খলিল, নোয়াখালীর শিপের এবি হক মোহাম্মদ আনয়ারুল, চট্টগ্রামের এবি রহমান মো. আসিফুর, চট্টগ্রামের এবি হোসাইন মো. সাজ্জাদ,  নাটোরের ওএস মাহমুদ জয়, সিরাজগঞ্জের ওএস হক মো. নাজমুল, চট্টগ্রামের উইলার হক আইনুল, চট্টগ্রামের উইলার শামসুদ্দীন মোহাম্মদ, বরিশালের উইলাব হোসাইন মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রামের ফায়ার ম্যান শাকিল মোশারফ হোসেন, চট্টগ্রামের চিপ কুক ইসলাম মো. হোসাইন, চট্টগ্রামের জিএস উদ্দিন মোহাম্মদ নূর ও নোয়াখালীর আহমেদ মোহা. সালেহ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!