ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চরম সংকটে থাকা চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় এ ব্যাংক দুটি একীভূত হতে যাচ্ছে। তবে দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যানদের দুর্নীতি আর অর্থপাচার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চুপ। গেল কয়েক বছরে তেমনটাই দেখা গেছে।
বেসরকারি খাতের এই ব্যাংক দুটির মধ্যে আগামী সোমবার একীভূত হওয়া নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হবে। দূর্বল ব্যাংক একীভূত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক উদ্যোগের পর দুটি ব্যাংকের একীভূত হওয়ার এটিই প্রথম সিদ্ধান্ত।
জানা গেছে, দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হবে বাংলাদেশ ব্যাংকে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
দুনীতিগ্রস্ত এবং অর্থ পাচারকারী হিসেবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত এই একীভূত হওয়ার আড়াঁলে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এমন চিত্র দেখে একীভূত হওয়াকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি করে রেহাই পাওয়ার নতুন পদ্ধতি।
পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার এক্সিম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচিত হয়। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়। একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ দুপুরের পর পরিচালনা পর্ষদের সভা ডাকে পদ্মা ব্যাংকও। এ সভায় একীভূত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কীভাবে এই একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও পরামর্শক্রমে দুই ব্যাংকের আইনজীবীরা ঠিক করবেন। এ নিয়ে আগামী সোমবার একটি সমঝোতা চুক্তি হবে। ওই চুক্তির পর একীভূত হওয়ার কার্যক্রমের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এর আগে ৪ মার্চ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, চলতি বছরের মধ্যে ৭ থেকে ১০টি দূর্বল ব্যাংককে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হতে পারে। এ সময়ের মধ্যে দূর্বল ব্যাংকগুলো নিজেদের ইচ্ছায় একীভূত না হলে আগামী বছর থেকে তাদের চাপ দিয়ে একীভূত করা হবে।
এর আগে, গত ৩১ জানুয়ারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক আলোচনায়ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দূর্বল ব্যাংককে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেখানে একীভূত হওয়ার লক্ষ্যে ভালো ও দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচলাকদের (এমডি) নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরুরও পরামর্শ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দূর্বল ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে শিগগিরই একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিমালার আওতায় একীভূত হওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
সূত্র জানায়, সরকারের উচ্চপর্যায়ের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দুই ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের যৌথ ব্যবসা থাকায় প্রথম এই ব্যাংক দুটিকে বেছে নেওয়া হয়। এই একীভূতকরণের উদ্যোগের ফলে আর্থিক বাজারে কোনো অস্থিরতা তৈরি না হলে আগামী দিনে অন্য দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিষয়েও একই ধরনের সিদ্ধান্ত হবে।
এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্মা ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে, যা কিনে নেবে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি। যে কারণে ব্যাংকটির সম্পদের (ঋণ ও বিনিয়োগ) মান খারাপ হয়ে পড়েছে, তা আর থাকবে না। এরপর ভালো সম্পদগুলো নিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে এক্সিম ব্যাংক। এর ফলে এক্সিম ব্যাংকের সূচক খারাপ হয়ে পড়ার কোনো শঙ্কা নেই।
২০১৩ সালের চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে অনুমোদন পায় সাবেক ফারমার্স ব্যাংক। চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে এই ব্যাংকেই বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে এবং তা ঘটে ব্যাংকটি কার্যক্রম শুরু করার কয়েক বছরের মধ্যেই। এরপর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক। ২০১৭ সালে এ ব্যাংকটির মালিকানার সঙ্গে যুক্ত হয় সরকারি একাধিক ব্যাংক ও সংস্থা। ব্যাংকটির ৬০ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি।
এক্সিম ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। বর্তমানে এটি ইসলামি ধারার একটি ব্যাংক। ২০০৪ সালে ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে এক্সিম ব্যাংকের শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১০ টাকা। এদিন ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ১ শতাংশের মতো বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
বাংলাদেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, এবি ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংক অন্যতম।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকস হেলথ ইনডেক্স (বিএইচআই) অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পদ্মা ব্যাংক রেড জোনে আছে এবং এক্সিম ব্যাংক ইয়েলো জোনে আছে।
দুই চেয়ারম্যানের দুর্নীতি ও ডলার পাচার
এক্সিম ব্যাংক ও নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার। তিনি ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর নিজের চারটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে ২১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেন। তথ্য জেনেও নীরব থেকেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া চার বছর আগে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ব্যয়বহুল এলাকা কেনসিংটনের তার পাচার করা অর্থের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার দুইটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায়।
লন্ডনের ফিলিমোর গার্ডেন এবং ব্রান্সউইক গার্ডেনে বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও তার মেয়ের মালিকানাধীন কোম্পানির নামে বিলাসবহুল দুটি বাড়ির রয়েছে। ২০১৯ ও ২০২০ সালে এই দুটি বাড়ি কিনতে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড। তখনকার হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ছিল ২৩১ কোটি টাকা পাউন্ড। বর্তমান দর অনুযায়ী যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকায়। কোনো রকম মর্টগেজ সুবিধা ছাড়াই নগদ টাকায় এ মূল্য পরিশোধ করেছেন তারা। ব্রিটিশ সরকারের ল্যান্ড রেজিস্ট্রি দপ্তর ও ব্রিটিশ কোম্পানি হাউসের নথিপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দেশের অর্থ পাচারকারী ধনকুবের এই বাবার মেয়ে আনিকা ইসলাম স্থায়ীভাবে লন্ডনেই বসবাস করছেন।
তথ্যমতে, ফিলিমোর গার্ডেনে ‘এএনডব্লিউ লন্ডন প্রোপার্টিজ লিমিটেড’ কোম্পানির নামে মালিকানাধীন বাড়িটি কেনা হয়েছিল ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। নিবন্ধিত নথিতে যার পরিচিতি নম্বর রয়েছে বিজিএল ৩৭৩৬৬। বাড়ির পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা: ৩০ ফিলিমোর গার্ডেনস, কেনসিংটন, লন্ডন ডব্লিউ৮ ৭কিউ ই। ৫০০ বর্গমিটারের (৫৩০০ বর্গফুট) এ বাড়িটি কেনা হয় ৯৯ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে। যেখানে ৫টি বেডরুম, ৪টি বাথরুম ও ৪টি রিসিপশন রুম রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারসহ দেশের আর্থিক খাতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম সংঘটিত করার অভিযোগ উঠেছিল শিল্পপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বন্ড সুবিধার অপব্যবহার ও আমদানি-রপ্তানিতে জালিয়াতির মাধ্যমে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নাসা গ্রুপ ও এর অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নজরুল ইসলাম মজুমদার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এতে আরও বলা হয়, শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক হিসেবে প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে যে পরিমাণ আমদানি করা হয়েছে, রপ্তানি হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম। এভাবে গত চার বছরে কমপক্ষে ২১০ কোটি টাকা যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশে তিনি পাচার করার অভিযোগ আছে। যদিও শেষ পর্যন্ত অদৃশ্য কারণে ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, অধিক প্রভাবশালী ও সরকার ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ওই সময় উত্থাপিত অভিযোগটি অধিকতর তদন্ত না করেই অনেকটা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে, যা আজও আলোর মুখ দেখেনি।
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত
গত জানুয়ারি মাসের পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের চৌধুরী নাফিজ সরাফত। ‘ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যগত কারণ’ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত শেয়ারহোল্ডার হিসেবে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম পদ্মা ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত চেয়্যারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন।
২০১৩ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর চার বছর না যেতেই সংকটে পড়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকটি। পরিস্থিতির চরম অবনতি হলে ২০১৭ সালে পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ওই সময় ব্যাংকটির এমডি এ কে এম শামীমকেও অপসারণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন এই ব্যাংককে বাঁচাতে মূলধন সহায়তা দেয় সরকারি চার ব্যাংক ও আইসিবি। সেই সুবাদে ব্যাংকটির পরিচালনায় যুক্ত হন ওই চার ব্যাংক ও আইসিবির প্রতিনিধিরা। ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে দি ফারমার্স ব্যাংকের নাম বদলে রাখা হয় পদ্মা ব্যাংক।
২০২১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর এক বিজ্ঞপ্তিতে পদ্মা ব্যাংক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ডেল মরগান অ্যান্ড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে ব্যাংকটি। কোম্পানিটি ৭০ কোটি ডলার (৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ আনতে মধ্যস্থতা করবে। ২ সেপ্টেম্বর ডেল মরগানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে পদ্মা ব্যাংক। অনুষ্ঠানে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও ডেলমর্গানের চেয়ারম্যান রব ডেলগাডো উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক আর পদ্মা ব্যাংক সূত্র জানা যায়, অর্থনৈতিক সমস্যায় থাকা পদ্মা ব্যাংকে উদ্বার করতে ব্যাংকটি বড় আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পেরে তাদের এখন শেয়ার দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পেয়েই ব্যাংকটি এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। তবে সেটা বাস্তবায়ন হবে কি-না তা জানা যায়নি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, পদ্মা ব্যাংক বড় অঙ্কের আমানত রাখা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ার দেবে। ব্যাংকটিতে এমন আমানত রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। আমানতকারীদের মধ্যে সবই সরকারি ব্যাংক, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকারি খাতের ট্রাস্ট তহবিল।
ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় সরকারি খাতের আমানতকারীদের শেয়ার দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপরই আমানতকারীদের প্রস্তাব পাঠানো শুরু করেছে ব্যাংকটি।
এদিকে দুর্নীতি আর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ক্ষমতার চূড়ায় পৌঁছেছিলেন নাফিজ সরাফাত। ফলে আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতের অন্যতম আলোচিত চরিত্র ছিলেন তিনি। তাকে স্পর্শ করা যে কারো জন্য অসম্ভবের কাতারে পড়ছিল।
ধারণা করা হয়, তাকে নিয়ে আঁকা কার্টুনের জন্যই কার্টুনিস্ট কিশোরকে জেলে যেতে হয়েছিল। কার্টুনিস্ট কিশোর পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে নিয়ে কার্টুন এঁকে লিখেছিলেন সারাফাত, ব্যাংক খাওয়ার ধারাপাত। কিশোর ও তার বয়জ্যেষ্ঠ বন্ধু লেখক মোশতাক আহমেদকে ২০২০ সালের মে মাসে ঢাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ইউনিট-৩ এর সদস্যরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করে। কিশোরসহ আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং করোনভাইরাস মহামারি সম্পর্কে গুজব ছড়ানো এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য অপবাদ, বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।