ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সাথে যুক্ত এবং ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে রাজনীতিবিদদের সম্মানে এই ইফতারের আয়োজন করে দলটি। এই ইফতার অনুষ্ঠানে সরকার বিরোধী অন্তত ৬৫টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট উল্লেখযোগ্য। এতে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াও অংশ নেন। এই ইফতার অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে ইফতার পূর্ব সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।’
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একদফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সমন্বিতভাবে লড়াই করতে হবে। তাহলে আমরা যে চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি, সেই আন্দোলনে বিজয় অর্জিত হবে।’
সভায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আমার ফরিয়াদ ১৮ কোটি মানুষের দেশ পুরাটাই আজ মজলুম-পুরো জাতি আজ জুলুমের শিকারে পরিণত হয়েছে। মানুষের চিৎকারও তুমি শোন, চোখের পানিও দেখ। তুমি আমাদের সাহায্য কর। আমরা যেন ন্যায় ও জনগণের পক্ষে অবিচল ও সচল থাকতে পারি। কোনো জালিমের রক্তচক্ষুর কাছে আমরা যেন মাথানত না করি।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ যতদিন তার ন্যায্য অধিকার না পাবে, ততদিন আমাদের শক্তি দাও আমরা যেন আন্দোলন অব্যাহত রাখতে পারি। তোমার সাহায্যই কেবল আমাদের এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে পার।’
Pause
Unmute
Remaining Time -14:11
Close PlayerUnibots.com
উপস্থিত রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির কলেন, ‘মুক্তির এই সংগ্রামে ভেদাভেদ নয়, বিভেদ নয় বিরোধ নয়- মানুষের অধিকার আদায়ের পক্ষে আসুন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাই; বিজয় আমাদের হবেই।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘৭ জানুয়ারি পরিস্থিতির বস্তুগত পরিবর্তন হয়েছে এটা আমি মনে করি না। বরং মনে করি, রাজনৈতিকভাবে মানুষ আরও সংঘবদ্ধ, চেতনাবদ্ধ। মানুষের মধ্যে আকুলি-বিকুলিটাই বেশি- এই লড়াই জিততে হবে কীভাবে এবং কতদিনে। আমরা পারবই আজ কিংবা কাল, সেই জন্য বুঝে-শুনে আরও গুছিয়ে,ঐক্যবদ্ধভাবে শক্তিটা বৃদ্ধি করে এই লড়াই অব্যাহত রাখব- এই হোক আমাদের শপথ।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুনুর রশিদ, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
ইফতার অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল জবিউল্লাহ, ডা. শাহেদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জহির উদ্দিন স্বপন, আব্দুস সালাম আজাদ, সেলিম ভুইয়া, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তারসহ বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
এতে জামায়াতের মাওলানা আব্দুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আবুল কালাম আজাদ, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব ফারুক হাসান, অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান উপস্থিত ছিলেন। পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ অংশ নেন।