ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘আগেকার দিনে ডাকাতদের কেউ কেউ ডাকাতি করে বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতো। সেইসব ডাকাতদের মতো অবস্থা আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ লুটপাট করে সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নতুন উপাচার্যের দায়িত্বগ্রহণের দিন চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ করে বলেছেন, আগের উপাচার্য শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে। এভাবে হাসপাতালসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে লুটপাট করে।’
আজ শুক্রবার মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
নতুন উপাচার্যের দায়িত্বগ্রহণের সময় বিএসএমএমইউতে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানকার চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যরা বলছেন বিএসএমএমইউ’র বিদায়ী উপাচার্য শত শত কোটি দুর্নীতি করেছে। নতুন উপাচার্যের দায়িত্বগ্রহণের দিনে সেখানকার লোকজন অশ্লীলভাবে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নাচগান করেছে। নতুন উপাচার্যকে বরণ করে নিয়েছে। এভাবে দেশের সকল হাসপাতাল ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম একজন রিকশাচালক সরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। সেখানে চিকিৎসা হয় না, ওষুধও নাই। বেচারা টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারেনি, পরে আত্মহত্যা করেছেন। এরা শুধু ডাকাতের দল নয়, ছোটবেলায় গল্প শুনতাম, ডাকাতরা ডাকাতি করে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতো। বর্তমান আওয়ামী লীগ হলো এমন দল, তারা লুটপাট করবে, সব ধ্বংস করে দেবে। তাদের কিছু হলে বিদেশে যান চিকিৎসা নিতে। সেখানে ঘরবাড়ি করেছে। এই দেশকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ৭ জানুয়ারি প্রমাণ করে দিয়েছে তারা সরকারের সঙ্গে নেই। তারা বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আছে। দেশের মানুষ নীরবভাবে সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। কারণ নির্বাচনের আগে দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে নির্বাচন বর্জন করার জন্য মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছিল। তাদের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছিল নির্বাচন বর্জন করার জন্য। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে ভোটার দেখা যায়নি। ভোট কেন্দ্রে দেখেছি বানরের নাচ। দেখেছি কুকুর দৌঁড়াতে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সেখানে ঘোরাফেরা করেছে। কুমিরের বাচ্চার মতো লাইন করিয়ে রেখে একই লোককে বারবার দেখানো হয়েছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘শুধু মুন্সীগঞ্জ নয়, সারা দেশে অসংখ্য নেতাকর্মী কারাবরণ করেছেন। কেনো কারাবরণ করেছেন। কারণ তারা প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ভোট ডাকাত সরকারের ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তারা কি শুধু ভোট ডাকাতি করেছে? তারা ব্যাংক ডাকাতি করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে।’
তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি মানুষ ভোট দিতে যায়নি। ২০১৮ সালে গিয়েছে ভোট দিতে পারেনি। কারণ মাফিয়া সরকারের লোকজন ভোট দিতে দেয়নি। শুধু জাতীয় নির্বাচন নয়, উপজেলা, পৌরসহ সব নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। ভোটের সিস্টেম ধ্বংস করেছে। বিভিন্ন ব্যাংক ধ্বংস করে লালবাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘সারা দেশের অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে নিয়েছে মিথ্যা মামলায়। মামলা দিয়েছে প্রশাসনের লোকজন। প্রশাসন আর প্রশাসন নেই, আওয়ামীকরণ করা হয়েছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নষ্ট করেছে। বাংলাদেশের আদালত নিরপেক্ষ নেই। আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে বড় প্রমাণ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি আমেরিকায় গিয়েছেন সেখানে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। আদালত ধ্বংস করে দিয়েছে। ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। মানুষ বিশ্বাস করে আদালত থেকে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের লোকজন চুরি, ডাকাতি করলেও বিচার হয় না। অন্যদিকে, বিএনপির নিরাপরাধ লোকদের ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
সরকারের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর লোকজন। সরকার প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারে না। বলবে কি করে তারা নিজেরাই বলছেন প্রতিবেশী দেশ তাদের পাশে ছিল বলে তারা ক্ষমতায় এসেছেন।’