ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ তিন বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়েছে জানিয়ে অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ টাকা। এখন তা দেড় লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশের বৈদেশিক ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। গুলশানের একটি হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
এসময় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘গত দেড় দশকে ঋণ করে অনেক মেগা প্রকল্প করা হলেও তা মানুষের উন্নতিতে কাজে আসেনি। বরং মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার বেড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। বেকার বেড়েছে। ট্রেনিং নাই এমন মানুষের সংখ্যা ৪০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। ২৫ শতাংশ মানুষ আহারের জন্য ঋণ নিচ্ছে।’
সিপিডির বিশেষ ফেলো বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পের ৭০ শতাংশ নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরিতে। ফলে খাতভিত্তিক উন্নয়ন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রকল্প থেকে একটি গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে।’
মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন এ অর্থনীতিবিদ।
মেগা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিরা বিদেশে টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যারা গাজা বা ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলেন তাদের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত না। কিছুটা একমত। আমি তথ্য উপাত্ত দিয়ে আপনাদের দেখাতে পারি যে, কভিড, গাজা কিংবা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে না, সম্পূর্ণ ভীন্নতর কারণে এটা বেড়েছে। ২০১৮ সালের পরের থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।’ ঋণ বাড়া উদ্বেগের বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এখন রেভিনিউ বাজেট থেকে একটা পয়সা দিতে পারি না উন্নয়ন প্রকল্পকে অর্থায়ন করার জন্য। কেউ যদি বলে আমরা এখন ঋণে আছি, ডেফিনেটলি আমরা আর ঋণে নাই। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ সকলে আমাদের রেটিং নামাচ্ছে। আমরা সবুজ থেকে হলুদ হয়েছি। আমি বলব আমরা খয়েরিতে আছি। বর্তমান বাস্তবতা যখন ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে যখন আটকে দেয় তাকেই ব্রাউন জোন বলে। গত ১০ বছর যাবৎ বিনিয়োগ কেন ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে। দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হলো না। বৈদেশকি বিনিয়োগ কেন বাড়ল না। কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে গেল এবং গত বছর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অংশ হিসাবে সরকারি হিসাবে কমে গেছে।’