DMCA.com Protection Status
title="৭

ক্রসফায়ারে নিহত ছাত্রদল নেতা নুরুর মেয়ে পেল জিপিএ ৫

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পুলিশ পরিচয়ে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার পর খুন হওয়া চট্টগ্রামের ছাত্রদল নেতা নূরুল আলম নুরুর মেয়ে উম্মে হাবীবা এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে। হাবীবার সাফল্যে পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা। আত্মীয়-স্বজন সবাই হাবীবাকে নিয়ে আনন্দে উদ্বেল, কিন্তু হাবীবার মুখে নেই খুশির ঝিলিক। বাবা নূরুল আলম বেঁচে থাকলে সবচেয়ে খুশি হতেন; মেয়েকে নিয়ে নুরুর ছিলো অনেক স্বপ্ন, জানালেন নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তার।

নুরু হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাবা মায়ের পরিবারের সঙ্গে থাকছেন জানিয়ে সুমি বলেন, আমার তিন সন্তান নিয়ে আমি চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকি সব সময়। গত ৫ বছর ধরে আমি সন্তানদের নিয়ে চট্টগ্রামে একেবারেই যাই না। ঢাকার বাসার ঠিকানাও কাউকে জানাই না।

তিনি বলেন, বড় মেয়ে এবছর যাত্রাবাড়ির একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেছে। হাবীবাকে নিয়ে ওর বাবার (নুরু) অনেক স্বপ্ন ছিল। আমি সেই স্বপ্ন হয়ত বাস্তবায়ন করতে পারবো না। কিন্তু চেষ্টা করছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপির অনেক নেতাই আমার ও সন্তানদের খবর নেয়।

সুমি বলেন, স্বামীর খুনের বিচারও পাইনি, মামলাও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আমার ও সন্তাদের যে কোনো ক্ষতি করতে পারে ওরা (ক্ষমতাসীনরা)। এই ভয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলি না। তার পরও নানান সময় সাংবাদিকরা ফোন দেয়। ভয়ে ফোন ধরি না। রেকর্ড করে আবার কোন বিপদে ফেলে দেয়; এই আতঙ্ক আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
সংসারের বা সন্তানদের খরচ কীভাবে চলছে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বাবা মায়ের (হাবীবার নানা-নানি) সাথে তাদের পরিবারেই থাকছি। তারাই আমাদের সব ধরনের খরচ চালাচ্ছে। প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরেও বের হই না। আর আমি বাবা মায়ের অনুমতি ছাড়া কারো সঙ্গে কথাও বলি না। এখন আমার একটাই লক্ষ্য সন্তানদের মানুষ করা।

নুরুর বড় সন্তান হাবীবার ভালো ফলাফলে নুরুর পরিবারের কেউ খোঁজ নিয়েছে কী না প্রশ্নের জবাবে সুমি বলেন, সবাই খুশি। কিন্তু এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খুশি যে মানুষটা হতেন, সেই মানুষটাইতো নেই।

নুরু হত্যার সময় বাচ্চারা ছোট ছিল; তেমন বুঝতো না। এখন সবই বোঝে। মাঝে মাঝে মন খারাপ করে। আমি সান্ত্বনা দেই। এছাড়া কী-ই-বা করার আছে- যোগ করেন তিনি।  

এবছর এসএসসি পরীক্ষায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম নুরুর বড় মেয়ে উম্মে হাবীবা রাজধানী ঢাকার একটি স্কুল থেকে বাণজ্যি বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। হাবীবা ছাড়া নুরুর আরও ২টি ছেলে সন্তান রয়েছে। নুরু খুন হওয়ার পর থেকেই তিন সন্তান নিয়ে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাবা মায়ের সঙ্গে থাকছেন নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তার।

উল্লেখ্য,  ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজানে কর্ণফুলী নদী থেকে হাত-পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় ছাত্রদল নেতা নূরুল আলম নুরুর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগের দিন রাত ১২টায় পুলিশ পরিচয়ে চট্টগ্রাম নগরের চন্দনপুরা এলাকার বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন স্বজন ও বিএনপি নেতারা।

পর দিন সকাল ৬টার দিকে রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া খেলারঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে নুরুর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। বিকেল ৪টার দিকে রাউজান থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নুরুর গ্রামের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়া এলাকায়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!