ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) পেতে ব্যর্থ হওয়া প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশিকে নতুন দ্রুত প্রত্যার্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। দেশটির ভিসা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় অপব্যবহারকারীতে পরিণত হওয়ায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। খবর দ্য টেলিগ্রাফ।
বলা হচ্ছে, এই বাংলাদেশিরা গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ছাত্র, শ্রমিক বা পর্যটক ভিসায় এসে ‘পেছনের দরজা’ ব্যবহার করে আশ্রয় প্রার্থনা করে। প্রাথমিকভাবে মাত্র ৫ শতাংশ বাংলাদেশির আশ্রয় প্রার্থনা সফল হয়।
বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের ঘোষণাটি দেয় যুক্তরাজ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহেই দ্রুত প্রত্যার্পণ চুক্তির ইউকে-বাংলাদেশ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশও প্রত্যাবাসনে সম্মত হয়।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশির তালিকা করা হয়েছে। এই বাংলাদেশিরা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী এসে পড়াশোনা চলমান না রেখে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। এছাড়া শ্রমিক ও পর্যটকরাও রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন প্রত্যাখান করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীরা শুধু স্থায়ীভাবে থাকার উদ্দেশ্যে আশ্রয় চায়। বিষয়টি নিয়ে সরকার বাংলাদেশকে ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারী বৃহত্তম দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বৃটিশ সরকার মনে করে, এসব অভিবাসী ছাত্র, শ্রমিক বা পর্যটক ভিসায় এসে আশ্রয় দাবি করে ‘পেছনের দরজা’ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিল।
বৃটেনের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এর মাধ্যমে শুধু ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীই নয়, বিদেশি অপরাধী এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠানো সহজ হবে।
যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি আশ্রয় প্রার্থী আসে পাকিস্তান থেকে। তাদের প্রায় ১৭,৪০০ মামলা রয়েছে। এর পরে বাংলাদেশ ১১ হাজার। ভারত ৭৪০০, নাইজেরিয়া ৬৬০০ এবং আফগানিস্তান ৬ হাজার। এদের সবাইকে চুক্তি অনুযায়ী স্ব স্ব দেশে ফেরতে পাঠানো হবে।