DMCA.com Protection Status
title="৭

হাসিনা সবাইকে কারাগারে রেখে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন : কেজরিওয়াল

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবারও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টানলেন ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের পাশাপাশি এবারও তিনি রাশিয়া ও পাকিস্তানের প্রসঙ্গ তুলেছেন।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সবাইকে কারাগারে রেখে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন। পাকিস্তানে তারা (সেনাবাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করে) ইমরান খানকে কারাগারে পুরেছে। তার দল, দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারপর তারা জয়ী হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ মে) আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি তার কারাগারে যাওয়া, ভারতের গণতন্ত্র, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।

সাক্ষাৎকারে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন যেহেতু তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে বেরিয়ে এসেছেন, সেখানকার সময় সম্পর্কে তিনি কী ভাবেন?

উত্তরে কেজরিওয়াল বলেন, দেশ খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ধীরে, এবং এখন খুব দ্রুত, দেশ একনায়কতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা (কেন্দ্রের বিজেপি সরকার) প্রথমে (ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী) হেমন্ত সোরেনকে ও পরে আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।

আমাকে গ্রেপ্তার করে তারা দেশের মানুষকে একটা বার্তা দিচ্ছে। তা হলো তারা যদি কেজরিওয়ালকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করতে পারে, তাহলে যে কাউকেই তারা গ্রেপ্তার করতে পারে। তাই অন্যদের ভয় করা উচিত। আর তারা (বিজেপি) যা বলে, মানুষকে তা–ই করা উচিত। এগুলো একনায়কতন্ত্রের লক্ষণ।

গণতন্ত্রে তাদের (বিজেপি) মানুষের কথা শোনা উচিত। কিন্তু তারা জনগণকে তাদের কথা শুনতে বলছে। এ থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে। এক অর্থে, এটা স্বাধীনতাসংগ্রামের মতো। অনেক মানুষ যাঁরা আজ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন, তাঁরা দীর্ঘ সময়ের জন্য কারাগারে ছিলেন।

আমার কারাগারে যাওয়াটা দেশ বাঁচানোর জন্য, দুর্নীতির জন্য নয়। আপ নেতা মনীশ সিসোদিয়া ভুল কিছু করেছেন বলে কারাগারে যাননি। এই দেশের স্বাধীনতার জন্য মানুষ যেমন দীর্ঘদিন কারাগারে গেছে, আমরাও গণতন্ত্র ও সংবিধান বাঁচাতে কারাগারে যাচ্ছি। আমি সব সময় বলেছি, দেশের জন্য জীবন দিতে পারি। এটি সেই সংগ্রামের একটি অংশ।

এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির তৃতীয় মেয়াদ কেমন হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

উত্তরে কেজরিওয়াল বলেন, তারা সংবিধান পরিবর্তন করবে এবং দেশ স্বৈরাচারের দিকে যাবে। হয় দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, নয়তো রাশিয়ার মতো নির্বাচন হবে, যেখানে পুতিন হয় সব বিরোধীকে কারাগারে পুরে রেখেছেন বা তাঁদের হত্যা করেছেন। এরপর নির্বাচন হয় এবং তিনি ৮৭ শতাংশ ভোট পান।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সবাইকে কারাগারে রেখে বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন। পাকিস্তানে তারা (সেনাবাহিনীর দিকে ইঙ্গিত করে) ইমরান খানকে কারাগারে পুরেছে। তাঁর দল, দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারপর তারা জয়ী হয়েছে।

আমাদের দেশেও এ ধরনের নির্বাচন হবে। বিরোধীরা কারাগারে থাকবে আর তারা (ক্ষমতাসীন) ভোট পেতে থাকবে। এবারও তারা আমাকে কারাগারে ঢোকাল। মনীশ সিসোদিয়াকে কারাগারে রেখেছে। আমাদের দলের পাঁচ শীর্ষ নেতাকে কারাগারে দিল।

তারা আমাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করতে চলেছে। তারা কংগ্রেসের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেছে। হেমন্ত সোরেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা এনসিপিকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। তাদের প্রতীক কেড়ে নিয়েছে। তারা শিবসেনাকে বিভক্ত করেছে। তাদের প্রতীক কেড়ে নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অনেক মন্ত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্ট্যালিন সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গেও একই কাজ হয়েছে। আমরা কীভাবে লড়াই করছি, তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।

এর আগে গত শুক্রবার (১৭ মে) ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়েও তিনি একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন। কেজরিওয়াল বলেছিলেন, পুতিন, শেখ হাসিনা ও পাকিস্তানের মতো নির্বাচন করে মোদী ভারতে জিততে চান।

তিনি বলেন, রাশিয়ার নাম শুনেছেন? রাশিয়া, পুতিন, পুতিন কী করেছে, যারা বিরোধী মতের নেতা ছিল, তাদের সবাইকে জেলে পুরেছে, নাই করে দিয়েছে (খুন করেছে), যাতে কেউ কিছু করতে না পারে। বিরোধী দলকে নাই করে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়েছেন পুতিন। যখন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সব ভোট তো আপনিই পাবেন। বাংলাদেশেও তাই হয়েছে। সব বিরোধী দলের নেতাদের জেলে ঢুকিয়েছে, শেখ হাসিনা জিতে গেছে। পাকিস্তানেও একই কাজ হয়েছে।

মোদীও ভারতে একই কাজ করতে চান উল্লেখ করে দিল্লির এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইমরান খানকে জেলে ঢোকানো হয়েছে। তার পার্টিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার প্রতীক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। জিতে গেছে। মোদীজি আমাদের (ভারত) দেশকে পাকিস্তান আর বাংলাদেশ বানাতে চান।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!