DMCA.com Protection Status
title="৭

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অভিযোগ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গোপনে বিয়ে করেছিলেন। তবে সাড়ে সাত বছরেও স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেননি। এমন অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফুয়াদ হোসেন শাহাদাতের বিরুদ্ধে। ঢাকার একটি সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এই অভিযোগ করেছেন। ওই নারী এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানিয়ে বিচার চেয়েছেন।

ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত এর আগে ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীও ছিলেন এই নেতা।

তবে গোপনে বিয়ে করে স্ত্রীকে স্বীকৃতি না দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফুয়াদ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সময় তিনি তার কথিত স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে দুটি জিডি করেছেন তার স্ত্রী।

গত ২৪ মে অভিযোগকারী তরুণী ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ফুয়াদের সঙ্গে তার ১০ বছরের সম্পর্ক। আট বছর আগে মুসলিম আইন অনুযায়ী তারা বিয়ে করেন। দীর্ঘ দাম্পত্য সম্পর্কের কথা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানিয়েছেন তিনি। ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি মীমাংসা করার দায়িত্ব দেন। পরে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ মীমাংসার জন্য ৫ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করেন৷

কিন্তু ৩ এপ্রিল ফুয়াদ তাকে অনুরোধ করে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করার জন্য তার বাসায় ডেকে নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই তরুণী। তিনি বলেন, বাসায় যাওয়ার পর সমাধান না করে ফুয়াদ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি লাথি মারেন এবং মারাত্মকভাবে জখম করেন। ওই পরিস্থিতিতে তিনি ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি শেখ ওয়ালী আসিফকে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানান। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।

ওই তরুণী আরও বলেন, 'সামাজিক স্বীকৃতি চাওয়ার পর থেকেই ফুয়াদ আমার পরিবারের সবার নামে মামলা দেওয়া এবং বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার হুমকি দেন। এমনকি প্রাণনাশ এবং আমার সম্মান নষ্ট করার হুমকি দিচ্ছেন। তার এসব কার্যকলাপে আমি আতঙ্কিত।'

জানতে চাইলে ওই তরুণী  বলেন, 'ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন তাকে ২০১৬ সালে গোপনে কাজী ডেকে বিয়ে করেন। তিনি কাউকে বিষয়টি জানাতে চাননি কারণ বিয়ে করলে ছাত্রলীগ করতে পারবেন না। আমিও বিষয়টি গোপন রেখেছি। কিন্তু এখন সে আরেকটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। আমাদের বিয়েকে স্বীকৃতি দিতে চাইছেন না। আমাদের বিয়ের সব ডকুমেন্টস ফুয়াদ তার কাছে রেখে দিয়েছে।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ফুয়াদ বলেন, এসব অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি বলেন, ওই তরুণীর সঙ্গে তার কখনো বিয়ে হয়নি। তার সম্মানহানির উদ্দেশ্যে ওই নারী মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ওই নারীর বিরুদ্ধে তিনি একাধিক জিডি করেছেন।

পরে ফুয়াদ এই প্রতিনিধিকে হোয়াটসঅ্যাপে গত বছরের ৩ নভেম্বর ও ৪ এপ্রিল তার করা দুটি জিডির কপি পাঠান। প্রথম জিডিটি হাজারীবাগ থানা ও দ্বিতীয়টি তিনি করেছিলেন পল্লবী থানায়। এরপর তিনি ৭ এপ্রিল শাহবাগ থানাতেও জিডি করেন বলে জানান।

প্রথম জিডিতে ফুয়াদ বলেন, ওই তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে তার বন্ধুত্ব তৈরি হয়। সেই সূত্রে বিভিন্ন সময় তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হয় এবং তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যান। সেই সুবাদে ওই তরুণী নিজের মুঠোফোনে তাদের ছবি তোলেন। পরে ঢাকায় তার বাসাভাড়াসহ অন্যান্য খরচ দিতে তাকে বাধ্য করেন এবং বিভিন্নভাবে টাকাপয়সা চেয়ে ফোনে হুমকি দেন। টাকা না দিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে সম্মানহানির হুমকিও দেন তিনি।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, 'এ বিষয়ে তিনি (অভিযোগকারী) একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি যাচাই-বাছাই করে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।'

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!