ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃটানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতে সরকার গঠন করছে মোদি সরকার। এককভাবে না হলেও রাজ্য ভিত্তিক ছোট ছোট দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাঁধে চড়ে দেশটির সিংহাসনে বসছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই নেতা। আজ রোববার সন্ধ্যায় নতুন এ সরকার শপথ নেবে। এই অনুষ্ঠানে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নিচ্ছেন।
থাকছেন বাংলাদেশে তার ঘনিষ্ঠ মিত্র আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার সকালেই দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন তিনি। আগামীকাল নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সোমবার হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করবেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও নতুন মন্ত্রিসভার মূল শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। এ ছাড়া শপথ অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকটি দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির একান্ত বৈঠকের আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। যেহেতু আগামী কিছু দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ও চীন সফরের কথা রয়েছে। স্বভাবতই দিল্লির সফরটি কখন হতে পারে, তা নিয়ে তাদের কথা হবে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকটি হবে সংক্ষিপ্ত। তবে ওই বৈঠকেই আসন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের বিষয়ে আলোচনা সম্পন্ন হবে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের কোথায় কোথায় অগ্রাধিকার থাকবে, সেই বিষয়গুলো দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় উঠে আসতে পারে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যু, বিশেষ করে তিস্তা ও গঙ্গার মতো বিষয়, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মতো বিষয়সহ বাণিজ্য ও সংযুক্তির বিষয়গুলো আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে মোংলা বন্দর ব্যবহারের বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে ওই সংক্ষিপ্ত ওই বৈঠকে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, শপথ অনুষ্ঠানে যোগদান অনেকটা আনুষ্ঠানিকতা। আমরা একটি দ্বিপক্ষীয় সফর আয়োজনের জন্য কাজ করছি। আমাদের সেই সফরের সময়সূচি পুনরায় নির্ধারণের জন্য কাজ করব। ওই সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা সইয়ের কথা আছে। বেশ কিছু বিষয় ঘোষণার কথাও রয়েছে। আশা করি দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে আসন্ন দ্বিপক্ষীয় সফরে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে।
এদিকে শপথ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি গমনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ভারত সরকার। শেখ হাসিনাকে ‘বিশিষ্ট অতিথি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার সম্মানে শুভেচ্ছা ব্যানার টানানো হয়েছে সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে।
এছাড়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, 'আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারের এই সফর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ ও গভীর বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও জোরদার করবে।'