DMCA.com Protection Status
title="৭

চীনা অস্ত্রে নানা সমস্যা, নাখোশ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী?

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চীনের সরবরাহ করা সামরিক সরঞ্জাম ত্রুটিপূর্ণ বলে দেশটির কাছে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বাংলাদেশ বহু বছর ধরে চীন অস্ত্রশস্ত্র আমদানি করে আসছে। এসব অস্ত্রে যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর দিয়েছে। ইকোনোমিক টাইমসের রিপোর্ট অনুসারে, শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্য দেশও এই অভিযোগ করেছে। মিয়ানমারও চীনা ফাইটার জেট নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।

চীনা প্রতিরক্ষা শিল্পের বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেছেন যে, অত্যন্ত পরিশীলিত সামরিক হার্ডওয়্যার উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাব রয়েছে তাদের। তাই এখনও আধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জামগুলির শীর্ষ-শ্রেণির প্রস্তুতকারক হিসেবে চীন বিবেচিত হয় না।

অভিযোগ অনুযায়ী, চীন যে অস্ত্র বিক্রি করেছে তার বেশির ভাগই সেকেলে প্রযুক্তির, যা তারা পশ্চিম থেকে কপি করেছে। পশ্চিমের অনুরূপ সিস্টেমের তুলনায় কম খরচের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলি প্রায়ই চীনা অস্ত্র ক্রয় করে। এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অব চীনার মতো রাষ্ট্রচালিত রপ্তানি সংস্থার মাধ্যমে চীন অস্ত্র বিক্রি করে। তাদের সাথে পরিচিত একটি সূত্র গণমাধ্যকে জানিয়েছে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি চীনা কোম্পানিগুলির কর্ভেট, পেট্রোল ক্রাফ্টস এবং নৌ টহল যানের ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার অভিযোগ করেছে। এসব মালপত্রে ম্যানুফ্যাকচারিং ত্রুটি ও প্রযুক্তিগত সমস্যা পাওয়া গেছে।

এর আগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী চীনা তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমানগুলিতে প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা জানিয়েছে। এগুলো ডেলিভারির পরপরই চীনের তৈরি কে-৮-ডব্লিউ বিমানের গোলাবারুদ ব্যবহার করতে সমস্যা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, বাংলাদেশের ফাইটার এয়ারক্রাফটে চীনা রাডারগুলি সঠিক মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চীনের নর্থ ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (নরিনকো) থেকে মেইন ব্যাটল ট্যাঙ্ক (এমবিটি ২০০০) কিনেছিল। নরিনকো এই ট্যাঙ্কগুলি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশের মংলা বন্দরে আসার পরপরই চীনের তৈরি দুটি ফ্রিগেট (বিএনএস উমর ফারুক এবং বিএনএস আবু উবাইদাহ) একাধিক ত্রুটির সম্মুখীন হওয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। এসব নৌযান মেরামতের জন্য চীনা কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেছে।

এক দশক আগে চীন বাংলাদেশের কাছে দুটি সংস্কার করা মিং-শ্রেণির সাবমেরিন বিক্রি করেছিল। প্রতিটি মাত্র ১০০ মিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ পরে দেখেছে, সাবমেরিনগুলি মোটেও ভালো নয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর চীনা ভ্যানগার্ড ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানির (সিভিআইসি) যুদ্ধজাহাজ 'বিএনএস নির্মূলে’ ইনস্টল করা সি৭০৪ সিস্টেমের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করেছিল, কিন্তু চীনা কোম্পানিটি শুধু অতিরিক্ত খরচের বিনিময়ে সিস্টেমটি আপগ্রেড করতে রাজি হয়েছিল। বাংলাদেশ চীন থেকে ৪৫টি মাল্টি লঞ্চ রকেট সিস্টেম (এমএলআরএস) ইউনিট কিনেছিল, কিন্তু এখন তাদের ৩৬টি তুরস্কের তৈরি এমএলআরএস দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করতে হচ্ছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!