DMCA.com Protection Status
title=""

আজিজ-বেনজীর-আসাদ চাপের মুখে দেশ ছেড়ে পলাতক

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজিজ-বেনজীরের পর আসাদুজ্জামান মিয়া। আওয়ামী শাসনামলের কুখ্যাত লাঠিয়াল, যিনি যেকোনো ধরনের সরকারবিরোধিতা এবং গণতান্ত্রিক লড়াইকে নির্মমভাবে দমন করেছেন পুলিশ বাহিনী দিয়ে। টানা তিনবার নির্বাচনের নামে প্রহসন আয়োজন করে দেশি-বিদেশি চাপ সহ্য করে যারা এই সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছেন তাদের একজন। বিনিময়ে এই সরকার তাদের অবাধ দুর্নিতীর সুযোগ দিয়েছে। তারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়।

অথচ এই আজিজ-বেনজীর-আসাদরা এখন চাপের মুখে। তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ হচ্ছে সংবাদমাধ্যেমে, যা একসময় কল্পনার অতীত ছিল। মুখোমুখি হতে হচ্ছে দুদকের। খবর পাওয়া যাচ্ছে, তিনজনই দেশ ছেড়ে পলাতক।

যদিও আওয়ামী লীগ জানুয়ারির নির্বাচন পার হয়েছে, কিন্তু ভাবার সুযোগ নেই যে, তাদের সমস্ত বাধা দূর হয়ে গেছে। এই শক্তিশালী কর্মকর্তাদের বিপদে পড়া হয়তো একটা ইঙ্গিত দেয় যে, এদের ধসিয়ে দেয়ার জন্য বড় শক্তি কাজ করছে। মনে রাখতে হবে, এদের বিরুদ্ধে মার্কিন স্যাংশন রয়েছে এবং যত কাছেরই হোক, এদের নিয়ে সরকারের চাপ রয়েছে। আবার এমনটাও হতে পারে, এই ব্যাপারটা নেহায়েতই দলীয় অন্তর্কোন্দল। বেনজীরের সাথে দেশের শক্তিশালী একটা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্ব প্রায় সবারই জানা। হয়তো এসব ঘটনা তারই জের। আবার এমনও হতে পারে যে, সরকারের উচ্চপদস্থরা ভাবছে, অর্থনীতির প্রবল চাপের মুখে কয়েকজনকে বলির পাঁঠা বানিয়ে এদের সম্পদ উদ্ধার করা একটা ভালো উপায়। হতে পারে, এদের মাধ্যেমে অন্যদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।

ঘটনা যাই হোক, লাঠিয়াল বাহিনীর জন্য এগুলো অশনি সংকেত। সামনের দিনে জনগণ ও বিরোধী দলের আন্দোলন ও প্রতিরোধ প্রবল হলে এরা হয়তো আগের মতো সরকারের হয়ে লাঠি ধরার আগে পরিণতি নিয়ে ভাববে। এদের মধ্যে সংশয় তৈরি হলে প্রবল শক্তিশালী সরকারের ক্ষমতার ভিত দুর্বল হবে।

একই রকম ব্যাপার দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যেমেও। ইন্ডিয়া বয়কট, কোক বয়কটের মতো আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেও জনগণ সোচ্চার হচ্ছে।

এই কুরবানি ঈদে এক দুর্নীতিবাজ কর-কর্মকর্তার ছেলে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কুরবানির পশুর ছবি দিয়ে জনতার রোষের শিকার হয়েছেন। কয়েক হাজার টাকা বেতনের এই কর্মচারীসহ অন্যরা কিভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সামাজিক চাপ বাড়ছে। যদিও বর্তমানে আইন ও রাষ্ট্রের সহযোগিতায় সামাজিক চাপের শক্তি কমে গেছে, তবু দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনতা ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে।

প্রবল শক্তিশালী আওয়ামী শাসনের ভিত্তি এসব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারী আর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো জরুরি। অচিরেই হয়তো এর ফল পাওয়া যাবে না, কিন্তু ক্রমাগত প্রতিরোধে আওয়ামী যন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়বে।

এই প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা জরুরি। দেশকে বাঁচাতে চাই সুদীর্ঘ সংগ্রাম।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!