DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানাল শেখ হাসিনার চীন সফর সংক্ষিপ্তের কারণ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীন যান। কিন্তু সফরের মাঝপথেই সফরের সময় একদিন কমিয়ে চারদিনের সফরকে তিনদিনে আনা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান একদিন আগে আসার কারণ হিসেবে বলেন, ‘সকালে আসলে একটা দিন চলে যায়, রাতে চলে আসলে দিনটা বেঁচে যায়।’

অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অসুস্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী একদিন আগে দেশে ফিরছেন। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দি ইকোনোমিক টাইমস বলছে অন্য কথা। দিন বাঁচানো বা মেয়ের অসুস্থতার কারণে নয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চীন আর্থিক সহায়তা না করা এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উপযুক্ত প্রটোকল না দেওয়ায় শেখ হাসিনা স্পষ্টতই ‘বিব্রত’ ছিলেন। আর এই কারণেই তিনি তার সফর সংক্ষিপ্ত করে ঢাকায় ফিরে আসেন। শনিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে দি ইকোনোমিক টাইমস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, শেখ হাসিনা চার দিনের সফরে চীন যান। কিন্তু সফর সংক্ষিপ্ত করে একদিন আগেই দেশে ফিরে আসেন। সফরের উদ্দেশ্য যে হাসিল হয়নি শেখ হাসিনার একদিন আগে দেশে ফেরা তারই ইঙ্গিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উপযুক্ত প্রটোকল দেয়নি যার কারণে তিনি ‘বিব্রত’ হয়ে থাকতে পারেন। চীন ঢাকাকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, হাসিনার সফরের আগে চীন প্রাথমিকভাবে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সফরের সময় সেই সহায়তার পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।


দি  ইকোনোমিক টাইমসে প্রকাশিত সংবাদের একাংশ।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হবে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু শির সঙ্গেও খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দেখা হয়। ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম জানায়, শি বৈঠকের জন্য আধা ঘণ্টা সময় দেন। বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা থেকে ৪টা ৩০ মিনিট। এর মধ্যে দোভাষীর সময়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এ ছাড়া বৈঠক হয় চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে। চীন সাধারণত দেশটিতে সফররত বিদেশি নেতাদের ব্যাপক মিডিয়া কভারেজ দিয়ে থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার সফরের তেমন কাভারেজ পায়নি চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে। এর তাৎক্ষণিক প্রমাণও পাওয়া যায়। কারণ শেখ হাসিনার সফরের সময় (১০ জুলাই) বেইজিং সফর করছিলেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনি-বিসাউয়ের প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো। তিনিও ব্যাপক কাভারেজ পান। শেখ হাসিনার প্রতি চীনের এই কূটনৈতিক গতিশীলতাই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে সফর সংক্ষিপ্ত করায় প্রভাবিত করতে পারে বলে দি ইকোনোমিক টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

এদিকে, শনিবার (১৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে জানানো হয় সাম্প্রতিক চীন সফরের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (১৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করবেন। রবিবার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ৮ থেকে ১০ জুলাই বেইজিং সফর করেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বাংলাদেশে ফিরেছেন। এই সফরে বাংলাদেশ ও চীন তাদের অংশীদারিত্ব জোরদারের লক্ষ্যে ২১টি সহযোগিতা নথি সই ও নবায়ন করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ-চীন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষসহ ৭টি ফলাফল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ও চীন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!