ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পুলিশের গুলিতে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ নিহত হয়েছেন। এসময় সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়েছেন। আবু সাঈদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি এ বছর স্নাতক সম্পন্ন করেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও ডিন ড. তুহিন ওয়াদুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি লাশের পাশে ছিলেন।
আবু সাঈদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তার সহপাঠীরা বলেন, আবু সাঈদ কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিল। সে আজ সামনে থেকে লিড দিচ্ছিল। পুলিশের ছোড়া টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট এবং ইট পাটকেল ছুড়লে গুলিবিদ্ধ হয় সে। পরে রংপুর মেডিকেলে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি কলেজ, জিলা স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে শহর থেকে মিছিল শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড় পৌঁছায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।এ সময়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করা ছাত্রলীগ পিছু হটে।
পরে ১ নম্বর গেটের সামনে ছাত্ররা প্রতিবাদ, আন্দোলন ও বিক্ষোভ করতে থাকলে পুলিশ প্রথমে টিয়ারগ্যাস ও পরে রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে অন্তত ৬৫ আন্দোলনকারী ও ৫ জন সাংবাদিক আহত হয়। পরে পুলিশের হামলার মুখে পিছু হটে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটে অবস্থান নেয়।
এরপর আবার পুলিশি পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা, মহানগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগ আসে এবং আন্দোলনকারীদের পিছু হটাতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এভাবে পিছু হটতে হটতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়া পেরিয়ে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে অবস্থান করে। পরে সমন্বয়ক আবু সাইদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা পুলিশ ও ছাত্রলীগকে ধাওয়া দিলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।
আহত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা সমন্বয়ক আবু সাইদের লাশ নিয়ে ক্যাম্পাসের দিকে পদযাত্রা শুরু করেছে।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। অনেক পুলিশ সদস্য এতে আহত হয়েছেন। একজন মারা গেছে বলে শুনেছি। তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা বলতে পারছি না।