ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অন্তর্বতীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ।
সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আমি রিকোয়েস্ট করেছি, উপদেষ্টারা যারা আছেন উনারা যেন রাজনৈতিক বক্তব্য না দেন। হঠাৎ করেই দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক বক্তব্য। এতে করে মানুষের মধ্যে একটা রিঅ্যাকশন আসতে পারে বা অন্য কোনো মেসেজ যেতে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে উনারা যেন বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
উপদেষ্টার বক্তব্য ঘিরে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা ফের আন্দোলনের ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রথম স্টেপে আমার কাছে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং মনে হচ্ছে। যেটা ট্রিগার হয়েছে তা এই রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার জন্য। আওয়ামী লীগের যাওয়া হয়েছে একটা রেভ্যুলিউশনের মাধ্যমে। এটা কুল ডাউন করতে দিতে হবে জাতিকে, আমাদেরকে। আমরা সবাই এফেক্টেড। হাজার মানুষের বেশি মারা গেছেন। ১৭ বছরের শাসন তাদের। আমার মনে হয়, উপদেষ্টারা যদি রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন তাহলে এই কনফিউশনটা ক্রিয়েট হবে না। কিংবা তাদের একজন স্পোকসম্যান থাকতে পারে।
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, না না এইগুলো এখন টু… আর্লি টু সে। কাউকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপার জনগণ ঠিক করবে, জনগণ এই রেভ্যুলিউশন করেছে, আগামীতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত কী হবে।
তিনি বলেন, সামনে গণহত্যার বিচার হবে। আরও অনেক ইনভেস্টিগেশন আছে, কোথা থেকে কী বের হবে, কী হচ্ছে না হচ্ছে। সব কিছুর পর মানুষ ঠিক করবে। রাজনৈতিক দল তো আসলে কাগজে কলমে হয় না। এটার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ কলমের খোঁচায়ও হয় না। জনগণই দাঁড় করায় আবার জনগণই ছিটকে ফেলে দেয়। সময়ই বলে দেবে কী হবে।
এর আগে সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘লোক জড়ো করুক, আর যা–ই করুক, আমি আপনাদের একটা অনুরোধ করি, এমন কিছু করবেন না যে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) জীবন বিপন্ন হয়। এ দেশের পাবলিক এখনো আপনাদের গ্রহণ করতে আসেনি। আমি বরং মনে করি, আপনারা আপনাদের পার্টি রি–অর্গানাইজ (পুনর্গঠন) করুন।’
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অনেক অবদান আছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। দলকে পুনর্গঠন করুন, রাজনৈতিক দলের মতো যেভাবে থাকে, নির্বাচন এলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, জনগণ ভোট দিলে ভোটে যাবেন।’
একইদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা উপদেষ্টাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন, আপনারা বক্তব্য দেওয়ার আগে ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্র মনে রাখবেন। খুনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সতর্ক করে দিতে চাই, আমরা যেভাবে স্বৈরাচারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়েছি, ঠিক একইভাবে স্বৈরাচার পুনর্বাসনের চেষ্টাকারীদেরও নামাতে সময় লাগবে না।