DMCA.com Protection Status
title="৭

এমপি কোটায় আনা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে শুল্ক বিভাগঃদিতে হবে পুরো শুল্ক

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪৪টি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে শুল্ক বিভাগ। কারণ এই গাড়িগুলো যারা আমদানি করেছিলেন তারা এখন আর সংসদ সদস্য নন। ফলে তাদের কোটায় আমদানি করা গাড়িগুলো আর শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। এ কারণে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। এখন এসব গাড়ির  ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত হবে   তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
তবে চলতি মাসের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এ বিধানের আওতায় আনা সাতটি গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হলেও এখনো বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছে নিবন্ধন করা হয়নি। সেগুলোও নিবন্ধন পাবে কি না তা নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে।

এনবিআরের নথি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম, মংলা বন্দর ও কমলাপুর আইসিডি থেকে যে সাতটি গাড়ি ছাড়া হয়েছে, সেগুলো আমদানি করেছেন ক্রিকেটার ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের ফয়জুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ আসনের আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের মুজিবুর রহমান মঞ্জু এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরি। আরেকজন সাবেক সংসদ সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি। 
সংসদ সদস্য কোটায় শুল্কমুক্তভাবে এসব গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দর, মংলা বন্দর ও কমলাপুর আইসিডি দিয়ে আমদানি হয়েছে। আমদানিকারকের পক্ষে এসব গাড়ি খালাসের দায়িত্বে ছিলেন সিএন্ডএফ এজেন্ট নাভানা লিমিটেড, গোল্ডেন স্টার এজেন্সি এবং ছেরি ইন্টারপ্রাইজসহ ছয়-সাতটি প্রতিষ্ঠান। খালাসের অপেক্ষায় থাকা এসব গাড়ির আমদানিকারকরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা। ফলে স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই এসব গাড়ি খালাস করতে হবে।

তবে আগস্ট মাসের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে এমপি সুবিধায় খালাস নেওয়া ৭টি গাড়ির বিষয়ে আইন মন্ত্রণায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, এই ৫১টি গাড়ির (যার বেশিরভাগই টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ও ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো) আমদানিমূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা। সবচেয়ে কম দামের ল্যান্ড ক্রুজারটি আমদানি করা হয়েছিল ৯৮ লাখ টাকার সামান্য কিছু কমে। শুল্ক দিতে গেলে গাড়িটির দাম পড়বে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা ৩৩৪৬সিসির এ গাড়িটির স্বাভাবিক শুল্ককর হার ৮২৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
আমদানি করা এসব গাড়ির বেশিরভাগই জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এল.সি স্টেশন ওয়াগনের এসব গাড়ির ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৩০০০-৪০০০ সিসি।
সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পর তার জীবদ্দশায় একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করতে পারেন। এ ধরনের গাড়ির ওপর কর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তবে নির্বাচিত এমপিদের একবার তা দিতে হয় না।

ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সংসদ ভেঙে দিলে সংসদ সদস্যরা সংসদে তাদের সদস্যপদ এবং করমুক্ত গাড়ির মতো সুযোগ-সুবিধা হারান।

জানা যায়, বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা ৪৪টি গাড়ির মধ্যে মাত্র তিনটি গাড়ির বিপরীতে বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়েছে। দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া, টাঙ্গাইল-৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববির নামে এসব এন্ট্রি দাখিল করা হয়। অপর ৪১টি গাড়ির বিপরীতে কোনো আমদানি নথি দাখিল না হওয়ায় তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!