ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গভীর রাতে মুখে সার্জিক্যাল মাস্ক আর গায়ে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে একদল লোক একটি বাসায় ঢুকে সাড়ে ৭৫ লাখ টাকা ও ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড়ের কাছে একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বাড়িটি ব্যবসায়ী আবু কোম্পানির বলে পরিচিত হলেও ওই ব্যক্তির নাম আবু বকর।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান জানান, মুখে মাস্ক লাগিয়ে সেনাবাহিনীর পোশাক পরে আসা লোকজনকে দেখে দারোয়ান গেট খুলে দেয়। এরপর তারা তিনতলায় আবু বকরের ফ্ল্যাটে যায়। র্যাবের জ্যাকেট পরা ও সাদা পোশাকের লোকজনও ছিল তাদের সঙ্গে।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা যে কয়জন এসেছিল, তারা এমনভাবে এসেছিল যে বোঝার উপায় নেই তারা সেনাবাহিনীর সদস্য নয়। বাড়িতে ঢুকার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। আর দলের একজনকে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে।
ভুক্তভোগী আবু বকর বলেন, তারা বাসায় ঢুকে আমার বৈধ অস্ত্র থানায় জমা দেইনি বলে অস্ত্র নিতে আসার কথা জানায়। অস্ত্র থানায় জমা দেওয়া হয়েছে জানালেও তারা কোনো কথা না শুনে অস্ত্র খোঁজার নাম করে আলমারিগুলো খুলে তছনছ করে এবং টাকা স্বর্ণালংকার নেয়।
তিনি আরও বলেন, পরে তারা ফ্ল্যাটের একপাশে আমার অফিসে যায় এবং একইভাবে অস্ত্র আছে বলে সিন্দুক ও আলমারি খুলে টাকা নেয়। তারা প্রায় ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে ভোর সোয়া ৪টার দিকে বের হয়ে যায়। তারা দুটি মাইক্রোবাস ও দুটি প্রাইভেটকার নিয়ে বাসার ভেতরে ২৫/৩০ জন ঢুকেছিল, বাইরেও তাদের লোকজন ছিল।
তিনি বলেন, আমার বাসা অফিস মিলে নগদ ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্ত্রী, কন্যা, ছেলের-বউয়ের প্রায় ৬০ ভরির বেশি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। নগদ টাকার মধ্যে বড় অংশ ছিল জমি বিক্রির টাকা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মোহাম্মদপুর থানার ওসি বলেন, ডাকাত দলের সঙ্গে অস্ত্রের মতো দেখতে একটি ছিল, যা রাইফেলের মতো দেখতে বলে বাসার লোকজন মনে করছে। ওই অস্ত্রটি থানা-ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের একটি হতে পারে বলে ধারণা।
এ বিষয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান বলেন, ডাকাতির ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে। ডাকাতদের শনাক্তকরণে কাজ চলমান। সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নেমেছে।