ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ বিএনপি’র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএসের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া) তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের একটি দল শমসের মবিন চৌধুরীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে তিনি মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে রয়েছেন।
ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, ঠিক কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশের একটি সূত্র বলছে, গত বছরের ২৮শে অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মহাসমাবেশে হামলার ঘটনায় গত ১৪ই সেপ্টেম্বর পল্টন থানায় বিএনপি’র পক্ষ থেকে করা মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে শমসের মবিন চৌধুরীর। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে।
গ্রেপ্তারের আগে দুপুর ২টার পরে শমসের মবিন চৌধুরী ফোনকলে মানবজমিনকে জানান, তার খোঁজে বাসায় বেশকিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে পুলিশের পোশাক আছে, বাকিরা সিভিলে (সাদা পোশাকে)। নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে তাকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যেতে চান।
এর আগে বুধবার শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ ওঠে। সে ঘটনায় শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের অ্যাপয়েনমেন্ট নেয়া ছিল। সে হিসাবে আমরা থাইল্যান্ড যাওয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে বসেছিলাম। এরই মধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের দু’জনের পাসপোর্টের ফটোকপি। আমরা সেই ফটোকপি তাদেরকে দিই। এরপর আর কারও খোঁজ পাচ্ছিলাম না। অনেক সময় পর তাদেরকে খোঁজ করি। আমাকে বলা হয়- আপনার বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে একটি গোয়েন্দা বিভাগ ছাড়পত্র দিলেও আরেকটি গোয়েন্দা বিভাগ থেকে কিছু জানানো হয়নি। ক্লিয়ারেন্স না পেলে আমরা আপনাকে যেতে দিতে পারবো না। আমি বলি- আমাকে যেতে না দিলেও আমার স্ত্রী অসুস্থ। তাকে যেতে দেন। এরই মধ্যে বিমান ছেড়ে চলে যায়। বাধ্য হয়ে আমরা বাসায় ফিরে আসি। তিনি অভিযোগ করেন, আমার কাছে বিদেশ যাওয়ার জন্য আদালতের ছাড়পত্র থাকার পরও যেতে দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপি’র সব পদ ত্যাগ করেন। এরপর ২০১৮ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন। গত ৭ই জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপারসন হন তিনি।