ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। পতন হয় তার সরকারের। রাত ১১টার দিকে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।
তবে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপতি জানান, তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কোনো লিখিত নেই। পালিয়ে যাওয়ার কারণে সর্বোচ্চ আদালতের পরামর্শ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে শেখ হাসিনা পালানোর দু-মাস পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ আসে প্রবাসী সরকার গঠনের পাঁয়তারা করছে আওয়ামী লীগ। এদিকে ভারতে বসে প্রবাসী সরকার গঠনের নানা তথ্য-উপাত্ত পেয়ে এর প্রতিবাদে গত শনিবার রাতে কুমিল্লা নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল হয়েছে।
মিছিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, খুনি হাসিনা পালিয়ে গিয়েও বসে নেই। প্রতিনিয়তই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা খবর পেয়েছি, কুমিল্লা সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরায় আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী জড়ো হয়েছে। সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়ে সেখানে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় তাদেরকে বলে দিতে চাই, তাদের ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা কখনোই বাংলার মাটিতে সফল হবে না। ফ্যাসিবাদের দালাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, টোকাই লীগ, বাংলাদেশের কোথাও পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করলে তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করা হবে।
এদিকে প্রবাসী সরকার গঠনের বিষয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের প্রচার কমিটির সদস্য ও শেখ পরিবারের একজন শেখ রুবেল বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান করে শিগগিরই ভারতের মাটিতে প্রবাসী সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, গতকাল ভারতে আমাদের একটি ভার্চুয়াল মিটিং হয়েছে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় প্রবাসী সরকার গঠনের, যার প্রতিনিধিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
তবে শেখ রুবেল প্রবাসী সরকার ইস্যুতে ভারত সরকারের অনুমতির বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, দেখেন তাদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের কোনো কিছুই করা সম্ভব না। তবে দুদেশের সুসম্পর্ক যেন বজায় থাকে সেজন্যে আমরা কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতার কাছে প্রবাসী সরকার গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি স্বীকার না করলেও স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি।