ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ লেবার পার্টির দুর্নীতিবিরোধীমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক তার পরিবারের সদস্যদের সাথে বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড ঘুস নিয়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা যুক্তরাজ্যে তদন্তের দাবি উঠেছে। দ্য মেইল রবিবার এই খবর দিয়েছে।
টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন একটি অভিযোগ বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত করছে।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য। তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। টিউলিপ সিদ্দিক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি।
দ্য মেইল লিখেছে, টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভুয়া কোম্পানি ও মালয়েশিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড পাচার করেছেন এমন অভিযোগ শুনে বাংলাদেশের হাইকোর্ট দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক (বাঁয়ে) ২০৩ সালে ক্রেমলিনে তার খালা শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে
গত সপ্তাহে ডেইলি মেইলে খবর প্রকাশের পর লেবার পার্টির নেতারা অভিযোগগুলিকে 'ভুয়া' হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, মিসেস সিদ্দিক ঘুসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। টিউলিপ বলেছেন, এখনও কোনো তদন্তকারী তার সাথে যোগাযোগ করেনি।
কিন্তু দুদক কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে, পাঁচ তদন্তকারীর নেতৃত্বে একটি দল এখন মিসেস সিদ্দিক এবং অন্যদের সম্পর্কে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছে।
দুদক সম্ভবত রাজধানী ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে মিসেস সিদ্দিকের কাছে চিঠি পাঠাবে।
দ্য মেইলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে, একজন ব্রিটিশ মন্ত্রী অপরাধ তদন্তের আওতায় আসতে যাচ্ছেন।
দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আমরা সবাইকে চিঠি পাঠাব। তাকে (সিদ্দিক) ডাকা হবে জবাব দিতে।’
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হুসেন বলেছেন, চিঠিগুলি মিসেস সিদ্দিক এবং পরিবারের সদস্যদের ‘আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ’ দেবে।
মেইলে বলা হয়েছে, মিসেস সিদ্দিক যার ভূমিকা ব্রিটেনের আর্থিক খাতে জালিয়াতি বন্ধ করা, তিনি যদি দুদককে তদন্তে সহযোগিতা না করেন, তাহলে তিনি তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, হাসিনা সরকারের সদস্যদের চুরি করা বিলিয়ন বিলিয়ন পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবেন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক (বাঁয়ে) ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে তার খালা শেখ হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে
এর আগে গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির তদন্তকারীরা দুদকের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকে 'সহায়তা' করতে বাংলাদেশ সফর করেন।
এদিকে একজন টোরি এমপি সংসদীয় স্ট্যান্ডার্ড কমিশনারকে চিঠি লিখেছেন মিসেস সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার জন্য।
এ বিষয়ে লেবার পার্টি বলেছে, 'টিউলিপ এ বিষয়ে কারো সাথে যোগাযোগ করেননি এবং সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।'