DMCA.com Protection Status
title=""

খালেদা জিয়া-সেনাপ্রধান সাক্ষাৎ নিয়ে আনন্দবাজারে ইঙ্গিতপূর্ণ প্রতিবেদন

ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসর খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাৎ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সংবাদপত্র আনন্দবাজার। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপড়েনের মধ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জেনারেল ওয়াকারের এই বৈঠক ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী ঢাকার গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় সস্ত্রীক গিয়ে বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাপ্রধান। 

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার বাড়িতে সেনাপ্রধান ওয়াকারের সঙ্গে গিয়েছিলেন তার স্ত্রী সারাহনাজ কামালিকা রহমান। কামালিকা সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়। 

বিএনপি নেত্রীর প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট দু’জনের কথা হয়েছে। খালেদার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। এসময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজলে এলাহি আকবরও উপস্থিত ছিলেন।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইসলামপন্থী সেই রাজনৈতিক দলের কাছে জানতে চাই, একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন? আপনারা কোন সেক্টর কম্যান্ডারের আন্ডারে (অধীনে) যুদ্ধ করেছেন?’

ক্ষমতার পালাবদলের পরে জামায়াত নেতৃত্ব নিজেদের ‘একমাত্র দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল’ বলে তুলে ধরতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভি। বলেন, ‘এমন কথা বলবেন না। সকলে হাসবে।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ইউনূসের আমলে জামায়াতের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় অসন্তুষ্ট বিএনপি। বিশেষত, অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে জামায়াত-ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ এবং নির্বাচন ঘিরে টালবাহানার জেরে সেই অসন্তোষ আরও বেড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রিজভির বক্তব্যে। 

১৯৭১ সালে জামায়াতের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়—ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার ঘাতকবাহিনীর নেতা হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে।

হাসিনার আমলে কয়েক জনের সাজাও হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অন্য দিকে, হাসিনার বাবা শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগের মতোই মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী বিএনপি। খালেদা জিয়ার স্বামী তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে প্রথম বাঙালি অফিসার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইউনূস সরকার নানা টালবাহানা করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে বলেও ইতোমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আবার সেনাবাহিনীর ‘ভূমিকা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। হাসিনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেনারেল ওয়াকারের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। ব্রিটেনের প্রখ্যাত কিংস কলেজের এই প্রাক্তন শিক্ষার্থী এক সময় হাসিনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!