DMCA.com Protection Status
title=""

১৪ বছর পর সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়ার খোঁজ মিলেছে!

ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ অবশেষে ১৪ বছর পর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মেজর জিয়ার হদিস পাওয়া গেল। মামলা ও জঙ্গির খাতা থেকে নাম কাটাতে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামি। সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়াউল হকের (মেজর জিয়া) দাবি, ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী হওয়ায়, তাকে সামনে রেখে একের পর এক জঙ্গি নাটক সাজিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। 

সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হন মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। হাসিনা সরকারের পুলিশের খাতায় তিনি একজন মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি। কখনো আনসার উল্লাহ (জেএমবি), কখনোবা আইএস ও আল কায়েদার সদস্য হিসেবে দেখানো হয়েছে তাকে। জিয়াকে ধরতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল সেসময়।

ব্লগার দীপন, অভিজিৎ, জুলহাস হত্যাসহ ৭টি মামলার আসামি তিনি। যার মধ্যে তিনটি ফাঁসির দণ্ড ঝুলছে তার মাথায়। কিন্তু, কোথায় সেই মেজর জিয়া? মৃত নাকি জীবিত আছেন তিনি? ১৪ বছর সেই প্রশ্নের সমাধান দিতে পারেনি কেউ। 

দেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেল ২৪ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাদের হাতে বেশ কয়েকটি নথি এসেছে, যেখান থেকে প্রথমবার শনাক্ত করা গেলো বেঁচে আছেন সৈয়দ জিয়া। গেল ২৯ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রণালয়ে নিজের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়েও আবেদন করেছেন। অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানোর। 

দুই মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়া ওই নথির সূত্র ধরে কথা হয় মেজর জিয়ার আইনজীবীর সঙ্গে। তিনি নিশ্চিত করেন এই আবেদন কে করেছেন।

মেজর জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, জিয়া আমাকে নিজে মেসেঞ্জারে ফোন দিয়েছে। সে বলেছে যে মামলাগুলো হয়েছে এগুলো সব মিথ্যা। সে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছে। তার ব্যাপারে যে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে সেটা প্রত্যাহার করার জন্য। আইন উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছেন, তার পলিটিক্যাল মটিভেটেড মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য। 

এই আইনজীবী জানান, ২০১১ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ জিয়া। তবে কোন দেশে তা জানা যায়নি। ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, এখনো আমাকে জানাননি তিনি কোথায় আছেন। 

এরপর অডিও কলে সরাসরি জিয়ার সঙ্গে কথা বলার দাবি করেছে চ্যানেল ২৪। জিয়ার অভিযোগ, ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী হওয়ায়, হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি। 

সৈয়দ জিয়াউল হক বলেন, পা চাটলে সঙ্গী, না চাটলে জঙ্গি। এই ভাই বিগত ফ্যাসিস্ট ভারতীয় দালাল সরকার কিভাবে জঙ্গি ট্যাগ ব্যবহার করে। তাদের সকল বিরোধী প্রতিপক্ষকে দমিয়ে রেখেছে। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। লোকজনকে বাধ্য করে চার্জশিটে আমার নাম যুক্ত করা হয়েছে। 

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার দাবি, ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলায় টার্গেট করা হয়েছিল তাকে। ফাঁসানো হয় একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে। 

সৈয়দ জিয়াউল হক আরও বলেন, শুরুতে এক সময় জঙ্গি বলা হয়েছে। পরে এক সময় আল কায়দা বলা হয়েছে, পরে আনসার আল ইসলাম বলা হয়েছে। আরেক সময় আইএস বলা হয়েছে। অর্থাৎ যেভাবে চাপে রাখা যায়। 

আলোচিত জুলহাজ-তনয় হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড প্রাপ্ত হওয়ায়, জিয়াকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাই গেলো ২৫ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহারে লিখিত আবেদন করেছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!