ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ বিএনপির জেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অন্যতম জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে অশান্ত করার বিভিন্ন চক্রান্ত চলে আসছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিগত দিনে ক্ষমতার লোভ, আর্থিক লুলোপতা, আধিপত্যবাদের লোভ ও বাকশালের সাথে লিয়াজুবাজির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোন সম্মেলন করতে দেওয়া হয়নি। সাংগঠনিক স্থবিরতা ভেঙে যখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তখনই একটি পক্ষ এই সম্মেলনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে ও গুজব ছড়াচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপি’র সম্মেলন বিরোধীদের সাথে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, বিএনপি বিরোধী ও দেশবিরোধী গোষ্ঠীগুলো।
বিএনপির সাংগঠনিক ভীত দুর্বল করার জন্য বিএনপি বিরোধী একটি পক্ষ প্রতিনিয়ত জেলা জুড়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে সংঘাতের উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি তারা বিএনপি ও সম্মেলনের পক্ষের মিছিল সমাবেশগুলো তুলে না ধরে বিচ্ছিন্ন কিছু কর্মকাণ্ডকে জেলায় ও জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। আদতে সেই গ্রুপটি মনে করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সাংগঠনিক ভীত দুর্বল হলে আগামীতে তারা বিএনপির উপর একযোগে হামলে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে কাবু করে ফেলতে পারবে। এমনকি গোলযোগকে প্রবল করতে এখন তাদের নারীরা বোরকা পড়ে ও পুরুষরা বিভিন্ন ছদ্মবেশ মিছিলগুলোতে অংশগ্রহণ করছে।
আগরতলার সাথে সীমান্তের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখন অস্থিতিশীল পরিবেশ চায় দেশবিরোধীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শান্ত ও উন্নয়নমুখী পরিবেশ সৃষ্টি হলে আগরতলার জনজীবন তাদের কেন্দ্র বিমুখ হতে পারে। এছাড়া ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের বহু সন্ত্রাসী, অস্ত্রবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারী সীমান্ত পেড়িয়ে প্রতিবেশী আগরতলায় আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। সেই দেশবিরোধী পক্ষগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে সন্ত্রাসের হাত ধরে পুনরায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুনর্বাসিত হচ্ছে। তারা বিএনপির সম্মেলন বিরোধী অবস্থান নিয়ে গুটিকয়েক নেতাদের কাজে লাগিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করছে। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিনিময়ে তারা সেইসব নেতাদের থেকে আশ্রয় প্রশ্রয় ও অর্থের যোগান পাচ্ছে।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে আক্রমণ করার পর বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়া যেসব সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে পুনরায় ঢোকার চেষ্টা করেছিল তারা এখন বিএনপি বিরোধী ও দেশবিরোধীদের মদদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুনর্বাসিত হচ্ছে। যা খুবই শঙ্কার কথা।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শীঘ্রই সেইসব দেশবিরোধী সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান জরুরী হয়ে পড়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপি’র গণতান্ত্রিক সম্মেলন বিরোধী এক নেতার বিগত আওয়ামী লীগের সাথে লেয়াজো ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কে অশান্ত করতে লীগ সন্ত্রাসীদের সাথে সরাসরি কানেকশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বৈরাচারী হাসিনার প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলামের ছোট বোনের জামাই। ‘২৪ এর জানুয়ারির নির্বাচনে ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম প্রাথমিক মনোনয়ন না পেয়ে তৎকালে ভারত সফর করে সেখান থেকে মনোনয়ন নির্দেশনা নিয়ে আসেন।
আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত এই তাজুল ইসলাম বর্তমানে গ্রেফতারকৃত অবস্থায় থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে অস্থিতিশীল করতে বোনজামাই কচি মোল্লাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে কথিত বিএনপি সেজে সম্মেলন বিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পলাতক শেখ হাসিনা তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে।
কচি মোল্লা তার সন্ত্রাসের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য ঢাকায় দলের নাম ভাঙ্গিয়ে আওয়ামী লীগের সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সন্ত্রাসের অন্যতম সমন্বয়কারী সন্ত্রাসী ও বাঞ্ছারামপুর আ’লীগের নেতা, ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম এর ভাগ্নে ও কচি মোল্লার আপন ভায়রার ছেলে কাজী জাদিদ আল রহমান জনিকে সম্প্রতি গোপনে জামিন করিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে এসেছেন। সন্ত্রাসী জনি এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির সম্মেলন বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অন্যতম সমন্বয়কারী।
আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মদদ নিয়ে কচি মোল্লা ও খোকন গংরা বারংবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির গণতান্ত্রিক সম্মেলনকে সন্ত্রাসী কায়দায় মোকাবেলা করার হুমকি ধামকি প্রদান করছে। তারা সম্মেলনে সরাসরি হামলার হুমকিও দিচ্ছে।
এমনকি জনাব তারেক রহমান কর্তৃক মনোনীত সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনারদের উপরও সরাসরি হামলার হুমকি দিয়েছেন কচি মোল্লা ও খোকন।
মূলত সন্ত্রাসের উপর ভর করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির গণতান্ত্রিক সম্মেলন বাধাগ্রস্থ করতে চাচ্ছে বিএনপি বিরোধী ও দেশবিরোধী চক্রান্তকারীরা। যা বিএনপিকে এখন দেশপ্রেম ও সাহসিকতার সাথে অবশ্যই মোকাবেলা করতে হবে। সেই সাথে আগামী ১ ফেব্রুয়ারির গণতান্ত্রিক সম্মেলনকে সফল করতে কেন্দ্রকে আরো কঠোর হতে হবে।