DMCA.com Protection Status
title=""

আয়নাঘরের হোতা সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউলের এক পল্লবীতেই আছে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ

জুলকারনাইন সায়ের: আয়নাঘরের হোতা বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও তার স্ত্রী নুসরাত জাহান এবং তাদের দুই আত্মীয়ের নামে রাজধানীতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে। তারা ঢাকার পল্লবীতে ৮৩১.৪ শতাংশ (৫০৩.৮ কাঠা) জমি ক্রয় করেছেন। 

এই জমি ক্রয়ের সম্পূরক চুক্তিপত্রের দলিল যা স্বাক্ষর করেছেন জিয়াউল আহসান নিজেই—তা বাংলা আউটলুকের হাতে এসেছে। 

এ ছাড়া জিয়াউলের ১৯ বছর বয়য়সী মেয়ে তাসফিয়া আহসান জয়িতার নামে দেওয়া সম্পদের কিছু প্রমাণও বাংলা আউটলুকের হাতে এসেছে। এসব সম্পদ অর্জনে ক্ষেত্রে জিয়াউল সম্পৃক্ততার সুস্পষ্ট প্রমাণও পাওয়া যায়।

পারিবারিক সম্পত্তির উৎস ও সামরিক বাহিনীতে চাকরি থেকে পাওয়া থেকে অর্থের সঙ্গে এতো বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কথিত গোপন বন্দিশালা আয়নাঘর তৈরি করে সেখানে বিরোধী মতাবলম্বীদের তুলে নিয়ে বছরের পর বছর গুম করে রাখার অভিযোগ রয়েছে জিয়াউলের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বড় ধরনের আর্থিক সুযোগ নিয়ে জিয়াউল গুম করে রাখতেন। তা দিয়েই এতো বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। 

১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঝলকাঠি জেলায় জিয়াউলের জন্ম। ১৯৯১ সালের ২১ জুন সেনাবাহিনীতে পদাতিক কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কমিশন লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায় ২০০৯ সালে মেজর থাকাকালী জিয়াউলকে র‍্যাব-২-এর ভাইস-ক্যাপ্টেন করা হয়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ওই বছরের ২৭ আগস্ট র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের (গোয়েন্দা শাখা) পরিচালকের দায়িত্ব পান তিনি।  

তিন বছরের ব্যবধানে ২০১৩ সালে জিয়াউল আহসান পদোন্নতি পেয়ে কর্নেল হন এবং র‌্যারের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হিসেবে নিয়োগ পান। আড়াই বছর পর ২০১৬ সালে পদোন্নতি পেয়ে বিগ্রেডিয়ার হলে তাকে এনএসআইতে (ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স) পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০১৭ সালে জিয়াউল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন এনটিএমসির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২২ সালে এনটিএমসিতে মহাপরিচালক (ডিজি) পদ তৈরি করে জিয়াউলকে মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। তিনি এনটিএমসির প্রথম মহাপরিচালক হন। এই পদে থাকা অবস্থায় গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট মেজর জেনারেল জিয়াউলকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে  দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।

এদিকে, এনটিএমসি তথ্য ও যোগাযোগের ডেটা পর্যবেক্ষণ, সংগ্রহ ও রেকর্ড করার পাশাপাশি ফোনকল, ই-মেইল ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ইন্টারসেপ্ট করতো। তার-ই পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক এ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ বিরোধী মতের নাগরিকদের গুম, আয়নাঘরে নির্যাতন ও মানুষের ব্যক্তিগত কল রেকর্ড করা। এছাড়া হেফাজতের ঘটনায় যৌথ অভিযানে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশও দাবি করেছে, কর্মকর্তা জিয়াউল আয়নাঘর এবং ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ ও হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে তার বিচার চলছে। 

Share this post

error: Content is protected !!