DMCA.com Protection Status
title=""

সারজিস বা হাসনাত একজন মিথ্যা বলছেন: হান্নান মাসুদ

ক্যাপ্টেন (অবঃ) মারুফ রাজুঃ  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য দুই সংগঠক সারজিস আলম বা হাসনাত আবদুল্লাহর যেকোনো একজন মিথ্যা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ। আজ রবিবার সেনাবাহিনীকে নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর দেওয়া পোস্টের দ্বিমত জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সারজিস আলম।  হান্নান মাসুদ সেই পোস্টের কমেন্টে এই কথা লিখেছেন।

পোস্টের কমেন্টে হান্নান মাসুদ লিখেছেন, ‘এসব কি ভাই!! পাবলিকলিই বলছি- দুইজনের একজন মিথ্যে বলছেন। এটা চলতে পারে না। আর দলের গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট হোল্ড করেও আপনারা যেভাবে ব্যক্তিগতভাবে বিচরণ করছেন, এবং তা পাবলিক করে এনসিপিকেই বিতর্কিত করছেন।’

হান্নান মাসুদ আরও লেখেন, ‘মানুষ এনসিপিকে নিয়ে যখন স্বপ্ন বুনছে, তখন এভাবে এনসিপিকে বিতর্কিত করার কাদের এজেন্ডা!!! সরি, আর চুপ থাকতে পারলাম না।’

সারজিস আলম পোস্টে লিখেছেন, “মানুষ যেকোনো বক্তব্যকে ভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। হাসনাত যেভাবে সেনাপ্রধানের বক্তব্য গ্রহণ করেছে, আমার দৃষ্টিতে তা কিছুটা ভিন্ন। আমি সেটিকে ‘প্রস্তাব’ হিসেবে নয়, বরং ‘অভিমত প্রকাশ’ হিসেবে দেখছি। তবে সেনাপ্রধান সেদিন তুলনামূলকভাবে স্ট্রেইথ-ফরোয়ার্ড ছিলেন।”

তিনি বলেন, সেনাপ্রধান ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেও, সেটিকে তিনি কোনো চাপ প্রয়োগের বিষয় হিসেবে দেখছেন না। বরং সেনাপ্রধান দীর্ঘমেয়াদে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তার অভিমত প্রকাশ করেছেন।

সারজিস আলম জানান, সেনাপ্রধানের মিলিটারি অ্যাডভাইজারের মাধ্যমে আগেই কিছু বার্তা বিনিময় হয়েছিল। পরে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ আসে। বৈঠকে ছিলেন তিনজন—সেনাপ্রধান, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তিনি নিজে।

তিনি আরও জানান, পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবসে সেনাপ্রধানের ‘এনাফ ইজ এনাফ’ মন্তব্যের পর তারা বিষয়টি জানতে চান এবং আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপরই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

আলোচনায় উঠে আসে: রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের সম্ভাবনা, সাবের হোসেন, শিরিন শারমিন, সোহেল তাজের ভূমিকা।

সারজিস আলম বলেন, “যেভাবে হাসনাত বিষয়টি উপস্থাপন করেছে, আমি মনে করি আলোচনা ততটা চরমপন্থী ছিল না। তবে এটি অবশ্যই অতীতের যেকোনো দিনের চেয়ে বেশি স্ট্রেইথ-ফরোয়ার্ড ও আত্মবিশ্বাসী ছিল।”

হাসনাত তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছিলেন যে সেনাপ্রধান তাদের এক পর্যায়ে রেগে গিয়ে বলেছিলেন, ‘ইউ পিপল নো নাথিং, ইউ ল্যাক উইজডম অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স’।

এই প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, “এই কথোপকথন সত্য, তবে এটি রুমের ভেতরে নয়, বরং সেনাপ্রধানের বিদায়ের সময় গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে হয়েছে। আমি মনে করি, এটি রাগান্বিত টোনে নয়, বরং অভিজ্ঞতার পার্থক্যের কারণে বলা হয়েছিল।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এনসিপি কখনো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাতে চায় না। পাশাপাশি সেনাপ্রধানের পদত্যাগ প্রসঙ্গে কিছু জায়গায় আলোচনা আসলেও, এটি এনসিপির বক্তব্য নয়।

স্ট্যাটাসের এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, হাসনাতের বক্তব্যের সাথে তার কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। তবে তা ব্যক্তিগত আক্রমণের উদ্দেশ্যে নয়। বরং, ভবিষ্যতে এ ধরনের আলোচনার গোপনীয়তা রক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

তিনি লেখেন, “আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান যেকোনো স্রোতে গা ভাসানোর মতো ছিল না। আমরা হাসিনা রেজিমের বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়েছি, আজও কেউ হাসনাতের দিকে বন্দুক তাক করলে তার সামনে দাঁড়ানোর কমিটমেন্ট আমাদের আছে।”

সারজিস আলম তার বক্তব্য শেষ করেন এই বলে যে, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতে ‘আওয়ামী লীগের যেকোনো ভার্সন’ প্রতিহত করার লড়াই চলবে।”

Share this post

error: Content is protected !!