মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনেই ঘটছে অগ্নিকান্ডের ঘটনা। এতে দগ্ধ হয়ে হতাহত হচ্ছেন যানবাহনের চালক ও নিরাপরাধ যাত্রীরা। এ পর্যন্ত র্যাব-পুলিশের পাহারায় বোমা হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ-বিজিবি কর্ডন এবং কড়া পাহারার মধ্যেও কিভাবে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগাচ্ছে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। আবার আগুন লাগিয়ে বা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা নির্বিঘ্নেই সটকে পড়ছে। ইতিমধ্যেই এসব বিষয় নিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক, অগ্নিদগ্ধ মানুষ ও তাদের স্বজন এবং সুশীল সমাজ প্রশ্ন তুলেছেন।এধরনের ঘৃন্য নাশকতা বিএনপি জোটই করছে বলে সরকার বরাবরই অভিযোগ করে আসলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বরাবরই তা অস্বিকার করা হয়েছে এবং এসব ঘটনার সুষ্টু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার তাগিদও দিচ্ছে জনগন।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, ডেইলি স্টার , যুগান্তর, কালের কণ্ঠ, ঢাকা ট্রিবিউন, শীর্ষ নিউজ, রাইজিং বিডি, বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ এবং বিভিন্নভাবে অনুসন্ধানের মাধ্যমে এসব তথ্য নেয়া হয়েছে।
এদিকে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রাত ৯টার পর থেকে দূরপাল্লার বাস না ছাড়তে মালিক সমিতিকে অনুরোধ জানিয়েছেন পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। কোনো মালিক যদি নিজ দায়িত্বে বাস চালাতে চান তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তার ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে চালাতে পারবেন। অন্যদিকে র্যাব-পুলিশ যৌথবাহিনীর সিদ্ধান্তেই দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
র্যাব জানিয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ হচ্ছে সবচেয়ে বড় ফোর্স । যদি পুলিশ কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তবে তা যৌক্তিক। র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ বলেছেন, আমার জানা মতে র্যাবের পাহারায় থাকা অবস্থায় কোন গাড়ি বহরে হামলা বা র্দুঘটনা ঘটেনি। যদি কোথাও হয়ে থাকে দু’একটি ঘটনা তা শুধুমাত্র বড় গাড়ি বহর থাকলে কুয়াশায় অন্ধকারে হতে পারে। তবে এমনটি আমার জানা মতে হয়নি । আর অন্ধকারে দুর্বত্তদের আটক করাও সম্ভব হয়না।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০ দলীয় জোটের হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে গত কয়েকদিনে মহাসড়কে যেসব যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোল তার অধিকাংশই পুলিশ কর্ডন অথবা পুলিশের চোখের সামনেই ঘটেছে। কিন্তু পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তারা ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
রংপুরে পুলিশ ও বিজিবির পাহারায় চলন্ত বাসে পেট্টোল বোমা হামলায নিহত হয়েছেন ৫ জন। আহত ১১ জন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুলিশ ও বিজিবির পাহারায় চলন্ত যাত্রীবাহি বাস আইকনে পেট্ট্রোল বোমায় নিহত ৭জন। আহত ছিল ৩০ জন। যাত্রাবাড়িতে পুলিশের পাহারায় পেট্ট্রোলবোমায় নিহত ১জন নিহত অগ্নিদগ্ধ ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন ছিল আশঙ্কাজনক। গাইবান্ধায় পুলিশ বিজিবির পাহারায় চলন্ত বাসে পেট্টোল বোমায় নিহত ৬ জন , অগ্নিদগ্ধ ৪০,তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক ১০জন। বরিশালের গৌরনদীতে পুলিশের পাহারায় ট্রাকে পেট্ট্রোল বোমা হামলায় নিহত ৩ জন।
আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর উপস্থিতে বড় র্দুঘটনাগুলোতে কোন তদন্ত না হওয়া,ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক না করার ব্যাপারেও প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে সংস্থাগুলো। গত শুক্রবার রাত থেকে মহাসড়কের নিরাপত্তায় ৯০ প্লাটুন বিজিবি মাঠে ছিল বলে জানা গেছে। এছাড়াও আরো ৫১ প্লাটুন বিজিবি কর্ডন আইনশৃঙ্খলারক্ষা সহায়তায় মাঠে কাজ করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।