সরকারের একগুঁয়েমি, হঠকারী ও অপরিণামদর্শী কর্মকা- এবং পরিকল্পিতভাবে মানুষ হত্যা বন্ধ ও জনগণের মতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার হরণ ও পরিকল্পিতভাবে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে জনগণের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশের সংগ্রামী জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে পালিত সকল কর্মসূচিতে সরকার বাধা সৃষ্টি করে একদিকে নিজেরা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে, অপরদিকে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
দেশে চলছে জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। সরকার নিজেই এ সংকট সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে না করে সরকার জনগণের আন্দোলনকে সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদী হিসেবে চিহ্নিত করে বিদেশীদের সহানুভূতি পাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সে লক্ষ্যেই পরিকল্পিতভাবে দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা বোমা হামলা চালিয়ে তার দোষ জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের মনে রাখা দরকার জনগণের অধিকার হরণ করে কোন স্বৈরাচারী সরকারই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, এ সরকারও পারবে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দলীয় ক্যাডাররা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করছে। আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকার তা অগ্রাহ্য করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত। সৃষ্ট সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য জামায়াত ও ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বরাবরই ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু সরকার চায় ছলে-বলে-কৌশলে ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে বিরোধী দলের আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে।
কিন্তু এভাবে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা একগুঁয়েমি ও হঠকারিতা পরিহার করে জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, গতকালও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের ২ শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহেরের ঢাকাস্থ বাসায় তল্লাশির নামে হয়রানি করেছে। ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহেরের নিজ এলাকা কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের ১০টি বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
এ নিয়ে ডা. আবদুল্লাহ মো. তাহেরের ঢাকার বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তিনবার হানা দিলো এবং নিজ এলাকায় ৬৫টি বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে মূল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর ও তছনছ করেছে। তিনি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করে আন্দোলনকে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংগ্রামী জনতার প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান।