আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু এমপি বলেছেন, “দেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সম্ভব নয়। এজন্য পুরো দেশবাসীর সহযোগিতা দরকার।”
শনিবার সন্ধ্যায় বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এটি ছিল অনুষ্ঠানটির ১০৪তম পর্ব। তিনি ছাড়াও এবারের অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অব. গোলাম কাদের ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানে তাহিয়া ফেরদৌস নামের এক দর্শক জানতে চান- “সপ্তাহে দুই দিন ক্লাস আমাদের, আর বাকি পাঁচ দিন ছুটি- এই অবস্থা আর কতদিন চলবে?” জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, “এটির উত্তর দেবেন শেখ হাসিনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমিও উদ্বিগ্ন।” তিনি দাবি করেন, “এখনো কোনো বিএনপি নেতা বা কর্মীকে বোমাসহ পুলিশ গ্রেফতার করেনি। আওয়ামী লীগ চিঠি দিয়ে বলছে- অমুকের ছেলেকে ধরো। পুলিশ তাই করছে। এভাবে সহিংসতার দায় বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার দায়-দায়িত্ব সরকারের কিনা- এ প্রশ্নে আব্দুল মতিন খসরু বিএনপি জোটকে দায়ী করে বলেন, “আমি হামলা ঠেকাতে চেষ্টা করব…। কিন্তু উনারা (বিএনপিজোট) একবার কর্মসূচি বন্ধের ঘোষণা দিলেই তো হয়।” তিনি বলেন, “সহিংসতা বন্ধ করা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সম্ভব নয়। এজন্য পুরো দেশবাসীর সহযোগিতা দরকার।” দর্শকদের একজন বলেন, “দেশে চলমান পরিস্থিতি রাজনৈতিক সংকটের কারণে হয়েছে। এটি সমাধানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় বসা দরকার।”
আরেকজন বলেন, “আমরা প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। এজন্য দু’দলই দায়ী। আমরা এর সমাধান চাই।” তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “দেশের সব মানুষ যা চায় তা দুই দলের কেউ বুঝছে না। তাদের মধ্যে সমঝোতার অভাব দেখছি। এতে শুধু রাষ্ট্র বা জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, রাজনীতি একটি জনবিচ্ছিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে। এটা কারোরই কাম্য নয়।” গোলাম কাদের বলেন, “দেশের এ পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে হয়তো। তারপর কিছু একটা হতে পারে…।”
অনুষ্ঠানে তাহজীবা হোসেন নামের আরেক দর্শক জানতে চান- রাজনৈতিক সহিংসতার খবর গণমাধ্যমে দেখানোর ব্যাপারে সরকারের অনেকেই আপত্তি তুলেছেন। গণমাধ্যমের কী উচিত এসব সহিংসতার চিত্র উপস্থাপন বন্ধ করে দেয়া?
আব্দুল মতিন খসরু বলেন, “হ্যাঁ, এসব বন্ধ করা উচিত। হরতালে কেউ মাঠে নামে না। শুধু শুধু মিডিয়া প্রচার করে।” তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “মিডিয়া বন্ধ করে লাভ হবে না। কথা বলতে দিতে হবে। মানুষকে তথ্য জানার সুযোগ দিতে হবে। আসল সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর মিডিয়াকে নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয়া বন্ধ করতে হবে।” গোলাম কাদের বলেন, “মিডিয়া বন্ধ করে কিছু হবে না। মিডিয়ায় না না আসলে ফেসবুকে আসবে, অন্যন্য মাধ্যমে আসবে। তথ্যের অবাধ গতিবিধির এই যুগে মিডিয়া বন্ধ করে কী হবে।”