যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সি থেকে ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নবনিযুক্ত মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মিঃ আ্যাস্টন কার্টারের সাথে দেখা করে শুভেছ্ছা বিনিময় করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক বৈদেশিক উপদেষ্টা জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী।জনাব সাদী নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এই নতুন পদ গ্রহনের জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।এই সাক্ষাতে জনাব সাদী নতুন পেন্টাগন প্রধান জনাব কার্টারকে বাংলাদেশের বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। উল্লেখ্য জনাব কার্টার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চাক হেগেলের স্থলাভিষিক্ত হন এবং গতকালই শপথ গ্রহন করে নতুন দায়িত্বভার গ্রহন করেন।
জনাব সাদী নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জনাব কার্টারকে জানান ,বাংলাদেশের প্রধানতম বিরোধীদল বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর চরম নির্যাতন,জুলুম,গুম,খুন এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটিয়ে বর্তমান সরকার শান্তিপূর্ন বিরোধী আন্দোলনকে নস্যাত করার চেষ্টা করছে।আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির ভাবমূর্তি বিনষ্টের চেষ্টায় দেশে তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে নাশকতা করাচ্ছে এবং নিজস্ব মিডিয়া ব্যবহার করে দেশে বিদেশে মিথ্যা প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।
জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী সাক্ষাতের এক পর্যায়ে বাংলাদেশের চলমান বিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে আওয়ামী সরকারের অগনতান্ত্রীক আচরন এবং মানবাধিকার লংঘনের বিভিন্ন প্রামান্য দলিলাদী ,সাক্ষ্য প্রমানাদী এবং ভিডিও সিডি ইত্যাদি হস্তান্তর করেন।এসব প্রামান্য দলিলাদী নতুন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জনাব কার্টারের জন্য বাংলাদেশের বর্তমান প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করতে সহায়ক হবে বলে জনাব সাদী আশা প্রকাশ করেন।এমনকি বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া,যার গত শাসনামলে তার সরকারের জঙ্গী বিরোধী অবস্থানের কারনে বাংলাদেশ প্রায় জঙ্গীমুক্ত করা সম্ভব হয়েছিলো ,তাকেই জঙ্গীবাদের প্রবক্তা আখ্যা দিয়ে গত ৪৫ দিন ধরে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে ,বিদ্যুৎ,গ্যাস,টেলিফোন ,ইন্টারনেট ছাড়াই, যা কিনা বিশ্ব মানবাধিকারের চরম লংঘন এবং মানবতা বিরোধী একটি কাজ।
জনাব সাদী নয়া মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে আরও জানান,মুখে নিজেদের সেকুলারিস্ট দাবী করলেও আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৬ ক্ষমতায় যাবার লক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নামের একটি উগ্রপন্হী ইসলামী দলের সাথে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশে শরিয়া আইন জারীর অঙ্গিকার করে চুক্তি সাক্ষর করেছিলো।তাই আওয়ামী লীগের নিজেদের সেকুলারিস্ট দাবী করে প্রচারনা একটি উদ্দেশ্যপ্রনোদিত কৌশল মাত্র এবং এর ফলে তারা পশ্চিমা বিশ্ব তথা ইসলাম বিরোধী বলয়কে বিভ্রান্ত করতঃ তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে মাত্র।
দেশের চলমান সংকটজনক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জনাব সাদী জানান, গত বছরের ৫ জানুয়ারি ‘ভোটার বিহীন বিতর্কিত নির্বাচনকে’ কেন্দ্র করে দেশে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এতে নিরাপত্তাহীনতা, অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা গোটা জাতিকে গ্রাস করেছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের চলমান অবরোধ-হরতালের কথা তুলে ধরে বলেন, সরকার চলমান আন্দোলনকে প্রচণ্ড দমন-পীড়ন চালিয়ে স্তব্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে গোটা দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক সহিংস পরিস্থিতি। জনজীবনে শান্তি হারিয়ে গেছে। গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ক্রসফায়ার-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বলেন, দেশে আজ যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার মূলে রয়েছে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন। ‘একতরফা’ নির্বাচন থেকে উদ্ভূত সংকট কেবল একটি গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই সুরাহা সম্ভব।
পরিশেষে জনাব জাহিদ এফ সরদার সাদী নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য এবং সাফল্যমন্ডিত জীবন কামনা করে তাঁকে সাধুবাদ জানান।