এফ বি আই এজেন্ট কে ঘুষ দিয়ে সজিব ওয়াজেদ জয়ের ব্যাক্তি তথ্য ও সম্পদের তালিকা বের করে নেয়ার অপরাধে রিজভী আহমেদ সিজার কে ৪২ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সিজার এখন পর্যন্ত কারাগারে যায়নি এবং আগামী কয়েকদিনের ভিতর তার কারাবাস শুরু হবে। তাই কারাগারে যাবার আগে দেশবাসিকে জানানোর জন্য আজকে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।সভার প্রারম্ভে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী কিছু লীগের কিছু সমর্থক তুমুল হট্টগোল শুরু করলে,তড়িঘড়ি করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সংবাদ সম্বেলন শেষ করা হয়।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন জয়ের ব্যাক্তি তথ্য প্রমাণ সহ এফ বি আইয়ের কাছ থেকে বের করে নেয়ায় চুরির দায়ে আমাকে আদালত আমাকে জেল দিয়েছে। দেশকে ভালো বেসে আমি আমেরিকার আইন লঙ্ঘন করে শাস্তি পেয়েছি। এজন্য আমি গর্বিত কারণ আমি আমার কাজ সফল ভাবে করতে পেরেছি। কারণ জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার সম্পদের তথ্য প্রমান এখন আমার হাতে যা আদালত তার রায়ে প্রকাশ করেছে।
নিজের লিখিত বক্তব্যে রিজভী আহমেদ সিজার বলেন, ‘নিউ ইয়র্ক ও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ও আমাকে নিয়ে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এসব তথ্যের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবতার কোন মিল নাই। কোনো কোনো সংবাদ মাধ্যমে আদালতের মূল রায়কে পাশ কাটিয়ে কিছু উদ্দেশ্যমূলক অসত্য তথ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জয় বা তার পরিবারের কাউকে অপহরণ কিংবা তাদের কোনো ক্ষতি করার অথবা ভীতি প্রদর্শনের কথা আদালতের রায়ে উল্লেখ নেই। অথচ কোনো কোনো সংবাদপত্র আমার স্বীকারোক্তি হিসাবে এ ধরণের কথা প্রকাশ করেছে, যা দু:খজনক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ একটি গরীব দেশ। সেই দেশের নি:স্ব মানুষের অর্থ লুণ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ আছে, যারা মুখে যাই বলুক, বাস্তবে মহাডাকাত। তারা কিভাবে দেশকে লুণ্ঠন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবিশ্বাস্য ধরনের বিশাল অংকের অর্থ সঞ্চয় করেছেন, তেমন কিছু কথা গল্পেচ্ছলে জানতে পেরে আমি ভীষণ দু:খ পাই। তাদের এই মহাডাকাতি আমার বিবেককে নাড়া দেয় এবং মনকে ক্ষুদ্ধ করে। তাই দেশের প্রতি ভালবাসার টানে স্বত:প্রণোদিত হয়ে এসব লুটেরাদের অন্যতম মোড়ল সজিব ওয়াজেদ জয়ের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়ায় মনোনিবেশ করি। সেই প্রচেষ্টায় যতটুকু তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি তাতেই আমি খুশি। রায়ে আমার সাফল্য সম্পর্কে আদালত আকারে-ইঙ্গিতে মন্তব্য করেছেন। ওইখানে ৩’শ মিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির স্পষ্ট উল্লেখ আছে। সুতরাং জয় কিভাবে বাংলাদেশের অর্থ বাইরে নিয়ে গেছেন তা প্রমাণের জন্য আর কোনো দলিলের প্রয়োজন নেই। আদালতের রায়েই তা স্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মহাডাকাতদের মুখোশ উন্মোচন করতে পেরে আমি গর্বিত। যেসব রেকর্ড সংগৃহীত হয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য তা-ই যথেষ্ট।’
সিজার সংবাদ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করার পর সেখানে দেয়া বক্তব্যে যু্ক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রিজভী আহমেদ সিজার একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সে কোর্টের পারমিশন ছাড়া কিভাবে প্রেস কনফারেন্স করতে চায়? এ রকম একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আমরা সংবাদ সম্মেলন করার সুযোগ দিতে পারি না। সংবাদ সম্মেলন করতে হলে তাকে কোর্টের পারমিশন নিয়ে আসতে হবে।
তবে সিজারের বাবা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাহমুদ উল্লাহ মামুন সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে আইনজীবীর মাধ্যমে কোর্টের অনুমতি নিয়েই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে কারাবাসে না যাওয়া পর্যন্ত যে কোনো নাগরিকের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।