মগবাজার এলাকার বিএনপি-দলীয় ওয়ার্ড কমিশনার চৌধুরী আলমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুম করে ফেলা হয় ২০১১ সালে। শাসক দলের পক্ষ থেকে নানা ধরনের কাহিনী রটানো হয়। তারা বলতে চেয়েছিল, চৌধুরী আলম কোথাও আত্মগোপন করে আছেন এবং তারা চোখ টিপে বহু অরুচিকর বিদ্রুপ করেছে।
পরের বছর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট বিএনপির নেতা ইলিয়াস আলী এক সন্ধ্যায় নিজের গাড়িতে ঢাকার বনানী দিয়ে যাচ্ছিলেন। র্যাবের পরিচয়ধারী একাধিক মাইক্রোবাস তার গাড়ির পথ রোধ করে। র্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত কয়েকজন লোক ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে টেনে বের করে এবং নিজেদের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। কয়েকজন স্থানীয় লোক এবং কাছের দোকানে ডাবের পানি পানরত জনৈক পুলিশ অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে এমন বিবরণই দিয়েছিলেন।
ইলিয়াস আলীর স্ত্রী স্বামীর মুক্তির আশায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুয়ারে বার বার ধরনা দিয়েছেন। যদ্দুর মনে পড়ে, প্রধানমন্ত্রী তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। তারপর অনেক নাটক হয়েছে ইলিয়াস আলীর গুম হওয়া নিয়ে। যে র্যাব বাহিনী ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে বলে সবাই সন্দেহ করে, তারা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও মিডিয়া কর্মীদের গাজীপুরের এক বাড়িতে নিয়ে যায়। ইলিয়াস আলী সে বাড়িতে আছেন বলে তারা নাকি খবর পেয়েছিল। তার পরও আরো বহু স্থানে ইলিয়াস আলীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে গুজব রটে। বহু ক্ষেত্রেই গুজবগুলো ছড়িয়েছিল র্যাব কিংবা পুলিশ। স্বামীহারা একটি পরিবার নিয়ে এ ধরনের কুৎসিত ও নিষ্ঠুর রসিকতায় মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সবাই মর্মাহত হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সবাই জানেন, এ দেশে মানবিক মূল্যবোধের কথা বলতে যাওয়ায় বিপদ আছে।
একই নিষ্ঠুর অমানুষিক খেলা শুরু হয়েছে বিএনপির অন্যতম যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের গুম হওয়া নিয়ে। বাংলাদেশে সরকারের রাজনৈতিক বিরোধী সব নেতা ও কর্মী এখন আত্মগোপন করে থাকেন। বিদেশ থেকে টেলিফোন করে এখন আর বন্ধুদের পাওয়া যায় না। বিএনপিকে গুঁড়িয়ে চুরমার করে দেয়ার হুমকি আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা এবং কোনো কোনো মন্ত্রী অজস্রবার দিয়েছেন। সবচেয়ে বীভৎস হুমকি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
তিনি বলেছেন, এখন যারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, অবরোধ করছে, তাদের নির্মূল ও অস্তিত্ববিহীন করে ফেলা হবে। এইচ টি ইমাম গত সোমবার আবার তার রক্ত হিম করা হুঙ্কার ছেড়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে যারা গণতন্ত্রের আন্দোলন করছে তাদের তিনি দানব আখ্যা দিয়েছেন এবং তাদের হত্যা করার জন্য সবাইকে আহ্বান করেছেন। হত্যার উসকানি দেয়া হত্যা করার মতোই যে ফৌজদারি অপরাধ, সেটা মনে রাখলে এইচ টি ইমাম ভালো করবেন।
এইচ টি ইমামদের গণহত্যাঃ
বিগত ছয় বছরে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ‘তৎপরতার’ অর্থ প্রতিপক্ষকে গুম, খুন, ক্রসফায়ার আর বন্দুকযুদ্ধে হত্যা
বলেই বুঝেছে দেশের মানুষ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গুম-খুন হওয়া ব্যক্তিরা বিএনপি কিংবা অন্য কোনো সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মী ছিলেন। ১৬ কোটির দেশ বাংলাদেশের অন্তত ৮-১০ কোটি লোক বিএনপির সমর্থক। বর্তমান সরকারের বিরোধী হবেন অন্তত ১৫ কোটি। এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে হত্যার, অর্থাৎ বিশ্বের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যারই হুমকি দিয়ে চলেছেন রক্তপিপাসু এইচ টি ইমাম। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর সব সভ্য দেশে এইচ টি ইমামের হুমকিটি নথিভুক্ত হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই। হিটলার-মুসোলিনিরও পতন হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকারেরও পতন হবে। এইচ টি ইমাম এবং তার সমগোত্রীয়রা যেন সেটা ভুলে যাচ্ছেন।
শাসক দল এবং তাদের সশস্ত্র ক্যাডার, র্যাব ও পুলিশের (দেশের বর্তমান গৃহযুদ্ধের আগ্রাসী পক্ষ) এই যেখানে মনোভাব, সেখানে গণহত্যার পরিবর্তে যারা গণতন্ত্রপ্রেমী তাদের ২৪ ঘণ্টাই সতর্ক হয়ে চলতে হয়। বিএনপিকে নেতৃত্ববিহীন করে ফেলার লক্ষ্য আওয়ামী লীগ কখনোই গোপন করেনি। খালেদা জিয়া ও তার পরিবারকে নাস্তানাবুদ করার অজস্র কৌশল করা হয়েছে। সরকার আশা করেছিল, অন্য শীর্ষ নেতাদের জেলে দিলেই তাদের পথ পরিষ্কার হয়ে যাবে। কুকুর কাউকে কামড়ালে, কাকে কারো কানে ঠোকর দিলেও খালেদা জিয়া এবং বিএনপির দু-চার কুড়ি নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। সরকারের দলীয়কৃত পুলিশ যাদের ধরতে পেরেছে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে আবার মাঝে মধ্যেই রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। স্বভাবতই বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গা-ঢাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে অসংখ্য ভুয়া মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার করার পর পরবর্তী নেতা রিজভী আহমেদ আন্দোলন সম্বন্ধে নেত্রীর নির্দেশ দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। তাকে গ্রেফতার করার পর পরবর্তী যুগ্মসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ গোপনে থেকে দলীয় নির্দেশ দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছিলেন। গত ১০ মার্চ উত্তরার একটি বাড়ি থেকে সাদা পোশাক পরা কয়েকজন লোক নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়।
পারিবারিক শোক নিয়ে অমানবিক রসিকতাঃ
এরপর থেকে সালাহউদ্দিনের আর কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না। সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ সরাসরি স্বামীর মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। বারবার চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর দর্শন লাভে ব্যর্থ হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়ে আসেন। এ দিকে তিনি স্বামীকে আদালতে হাজির করানোর জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। আদালত সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিলেও পুলিশ সে নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের দিক থেকে আদালতে বলা হয়, আইনশৃক্সখলা রক্ষী কোনো বাহিনী সালাহউদ্দিনকে গ্রেফতার করেনি।
প্রথমত, সালাহউদ্দিনের গ্রেফতারের তিন দিন আগে তার দু’জন ড্রাইভার ও এক কর্মচারীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। অনেকেরই ধারণা, তাদের কারো কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সালাহউদ্দিনের অবস্থানের খবর পেয়েছিল। দ্বিতীয়ত, এই গ্রেফতারের সময় সালাহউদ্দিনের স্ত্রী এবং স্থানীয় লোকেরা সেখানে পুলিশের একটি গাড়ি দেখেছিল এবং গ্রেফতারকারীদের সবাই পুলিশ বলে মনে করেছিল।
তার চেয়েও বড় কথা, বিগত ছয় বছরে এজাতীয় ঘটনা অনেক ঘটেছে। একটি ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন ছাত্র সাভারে বাসে ওঠার সময় নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের গ্রেফতার করে। বাসের অন্য যাত্রীরা চ্যালেঞ্জ করলে তারা নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী বলে পরিচয় দেয় এবং বলে যে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছাত্র তিনজনকে ছেড়ে দেয়া হবে। তারপর নিরাপত্তা বাহিনীর পরিচয় বহনকারী মাইক্রোবাসে ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হয়। বেশ কিছুকাল পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ তিনজন ছাত্রের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশের গ্রেফতারবাণিজ্য এবং র্যাব-পুলিশের ভাড়াটে ঘাতকতার বহু কাহিনী এখন লোকের মুখে মুখে ঘোরে বলে শোনা যায়। নারায়ণগঞ্জে ৭ হত্যায় র্যাবের ভূমিকার কথা সারা বিশ্বের মানুষ জানে। র্যাব-পুলিশ নিজেরাই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে দিয়েছে।
সাধারণ মানুষ করবে কী?
সমস্যা হয়েছে সাধারণ মানুষের। ডিবি কিংবা র্যাব পরিচয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের, এমনকি সাধারণ মানুষকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ ও র্যাব কোনো দায়দায়িত্ব স্বীকার করছে না। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ করবে কী? স্থানীয় এলাকার সব মানুষ মিলে এই গ্রেফতারকামী লোকগুলোর ওপর হামলা করে তাদের উচিত শিক্ষা দেয়া ছাড়া আর কী করতে পারে? ঊনবিংশ শতকে মার্কিন গৃহযুদ্ধের পরের কিছুকাল প্রাক্তন সৈন্যরা দলবেঁধে দস্যুবৃত্তি করত। বহু এলাকার মানুষ তখন
আত্মরক্ষার জন্য নিয়ম করেছিল যে, এই দস্যুদের দর্শন মাত্রই ঘণ্টা বাজানো হবে এবং এলাকার সব মানুষ যার যা অস্ত্র আছে তাই নিয়ে দস্যুদের প্রতিহত করবে। বাংলাদেশে র্যাব-পুলিশ পরিচয়ে গুম করা অবিলম্বে বন্ধ না হলে জনসাধারণকে মার্কিন ইতিহাসের সে অধ্যায় থেকে শিক্ষা নিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী হচ্ছে সরকার। তারা র্যাব-পুলিশকে দলীয়করণ করেছে। দলীয় নেতারা জাজ্জ্বল্যমান দুর্নীতি করছেন। র্যাব-পুলিশ চোখের ওপর সেটা দেখছে। তাদের কেন দুর্নীতি করার, গ্রেফতারবাণিজ্য করার লোভ হবে না? বিশেষ করে এখন যখন পুলিশ ও র্যাবের প্রধানরা আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের মতো রাজনৈতিক বক্তৃতা দিতে শুরু করেছেন। সমস্যাটি ক্রমেই আরো ব্যাপক সংক্রমিত হচ্ছে।
পুলিশ-র্যাবের গ্রেফতারবাণিজ্যের দেখাদেখি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছিনতাই ও গুম করে মুক্তিপণ আদায়ের ফ্যাশন চালু হয়ে গেছে। পণ না পেলে হতভাগ্য জিম্মি প্রায়ই খুন হচ্ছে। এসবের জন্যও সরকারই প্রত্যক্ষ দায়ী। তারা র্যাব-পুলিশকে রাজনৈতিক পেশিশক্তি হিসেবে ব্যববহার করছে। আইনশৃক্সখলা রক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়ার সময় তাদের কোথায়? অন্যথায় পুলিশের জমজমাট উপস্থিতির মধ্যে কী করে অভিজিৎ খুন হলো, তার ও তার স্ত্রীর চিৎকারে কেন পুলিশ এলো না এবং এখনো কেন পুলিশ খুনিদের ধরতে পারছে না?
সালাহউদ্দিনের গুম হওয়া নিয়েও ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার পরবর্তী অবস্থার মতো নিষ্ঠুর পরিহাস শুরু হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়া আবর্জনার আধারে করে সালাহউদ্দিনকে পাচার করে দিয়েছেন। অন্য মন্ত্রীরাও পরিহাস করে চলেছেন। এক মন্ত্রী বলেছেন, সালাহউদ্দিনকে পাওয়া যাবে মাটির নিচে গভীরে। পুলিশ ঢাকঢোল পিটিয়ে গাইবান্ধার চরে তল্লাশি চালিয়েছে। অবশ্য সেখানে কিছু পাওয়া যাবে বলে তারাও নিশ্চয়ই আশা করেনি। জনসাধারণের মনোযোগ ভিন্নমুখী করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। গাজীপুরের এক বাড়িতে ইলিয়াস আলীর সন্ধানের মতো এই তল্লাশিও তামাশায় পরিণত হয়েছে। এর পরও চট্টগ্রাম এবং অন্যত্র সালাহউদ্দিনের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে গুজব ছড়ানো হয়। কত অমানবিক মনোবৃত্তি হলে একটি পরিবারের চরম শোক নিয়ে এ ধরনের তামাশা করা যায়, ভাবলেও আশ্চর্য হতে হয়। পুলিশের সর্বশেষ পরিহাস হচ্ছে, সালাহউদ্দিন গুম হওয়ার দুই সপ্তাহ পরে শুধু কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে একটা তদন্ত কমিটি গঠন। এ কমিটির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ সার্বজনীন হতে বাধ্য।
বাংলাদেশকে বর্তমানে একযোগে রত্নগর্ভা, অস্ত্রগর্ভা এবং লাশগর্ভা দেশ বলতেই হবে। বিমানবন্দরে প্রায়ই কাঁড়ি কাঁড়ি স্বর্ণের বার উদ্ধার হচ্ছে, কূটনীতিকদের কাছেও স্বর্ণের বার এবং নগদ হাজার হাজার ডলার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এসব স্বর্ণ ও ডলারের পরিণতি সম্বন্ধে সাধারণ মানুষ আর কোনো খোঁজখবর জানতে পারে না।
কিন্তু র্যাব-পুলিশ যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি করছে। কী আশ্চর্য! রাশি রাশি অস্ত্র বেরিয়ে আসছে প্রতিটি স্থান থেকে। এ ধরনের এত ঘটনা ঘটেছে যে, অনেকেই এসব ঘটনাকে শিয়ালের কুমিরছানা পোষার গল্পের মতো মনে করছে। গল্পটি কি জানেন সবাই? কুমির তার কিছু শাবককে পুষতে দিয়েছিল শিয়ালের কাছে। শিয়াল একে একে নাদুস-নুদুস শাবকগুলো খেয়ে ফেলল, শুধু একটি ছাড়া। কুমির মাঝে মধ্যে আসে তার বাচ্চাদের দেখতে। ধূর্ত শিয়াল একটি বাচ্চাকেই বারবার দেখিয়ে কুমিরকে বিদায় করে। একই স্তূপ অস্ত্র যে বারবার র্যাব খুঁড়ে বের করছে না তার প্রমাণ কী? আর লাশ? বাংলাদেশের মাঠে-জলায় যান। দু-চারটি লাশ অবশ্যই পাওয়া যাবে। স্পষ্টতই পিঠমোড়া হাত-পা বাঁধা লাশগুলোকে গ্রেফতারের পর গুলি করা হয়েছে। বাংলাদেশী পুলিশের ভাষায় এটা হচ্ছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। ডুবন্ত মানুষ খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায়।
বাংলাদেশের বহু বিতর্কিত বর্তমান সরকার আশা করছে, বিএনপিকে গ্রেফতার আর গুম-খুন করে নেতৃত্বশূন্য করে ফেললেই তারা শত্রুমুক্ত হবে; তাদের গদি চিরস্থায়ী হবে। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গেছে খালেদা জিয়ার নির্দেশ বাংলাদেশের মানুষ সঠিক বুঝে ফেলেছে। নেতা-নেতৃত্ব উপস্থিত না থাকলেও তারা ঠিকই আন্দোলন চালিয়ে যাবে। দেশে যত দিন পর্যন্ত নির্দলীয় এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন না হবে তত দিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।