ফেসবুক। এ সম্পর্কে নতুন করে আর কিছু বলার নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইট। এর কাছে নেই বয়সের কোনো বাধা। ছোট-বড় সবাই এখন ফেসবুক ব্যবহার করছেন। তবে এর কিছু বিপত্তিও রয়েছে। এর মাধ্যমে নিত্যনতুন অপকৌশল প্রয়োগ করছে প্রতারকরা। সতর্ক না হলে অনেকেই হচ্ছেন প্রতারণার শিকার। ঠিক এরকম একটি প্রতারণার কৌশল চলছে বেশ কয়েকদিন ধরে। প্রেম নয়, এবার দেয়া হচ্ছে ডলারের প্রস্তাব। সম্প্রতি সোহেল নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ইনবক্সে একটি মেসেজ আসে। জনৈক ব্যক্তি মেসেজ করে জানান, তিনি ভাগ্যবানদের একজন, যিনি লটারির মাধ্যমে ৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার জিতেছেন। তাকে কয়েকটি ই-মেইল অ্যাড্রেস, ফোন নম্বর, ফ্যাক্স নম্বর পাঠিয়ে সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। এমন বার্তা পেয়ে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে সেই তরুণ বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তার ধারণা, তিনি আড়াই লাখ ডলার পাবেন। গত কয়েকদিনে এমন বার্তা আসে আরও অনেকেরই ফেসবুক মেসেজে। সবাইকে একইভাবে জানানো হয়, তিনি এ বছরের ২০ জন ভাগ্যবানের একজন। ৭ মার্চ রাত ১টার দিকে একই মেসেজ পান একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক। কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করেই জানতে পারেন, একই সময়ে তাদের ফেসবুকেও ওই মেসেজ এসেছে। বার্তাটি প্রেরণকারী হিসেবে রয়েছে রুচি সাঙ্গভির নাম। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কিছুদিন আগেও বিদেশি মেয়েদের ছবি ব্যবহারকারী ফেসবুক আইডি থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে মেসেজ দেওয়া হতো। এই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে বিড়ম্বনার শিকারও হয়েছেন। হতে হয়েছে নাজেহাল। এমনকি ধনকুবেরের কন্যা পরিচয় দিয়েও মেসেজ দেওয়া হতো। বলা হতো, তার কয়েক লাখ ডলার আটকে গেছে। এ জন্য টাকা ফেরত পেতে তাকে আইনি লড়াই করতে হবে। সে জন্য কিছু অর্থনৈতিক সাপোর্ট প্রয়োজন। যদি এই বিপদের সময় তাকে সাহায্য করা হয়, তাহলে উদ্ধারকৃত অর্থের অর্ধেকটা সাহায্যকারীকে দেওয়া হবে। আর এ জাতীয় মেসেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে প্রায়ই আসে। জানা গেছে, এগুলো আসলে ফেসবুকে স্পাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্পামের মাধ্যমে একই মেসেজ হাজার হাজার মানুষের কাছে পাঠানো হচ্ছে। যারা এই ফাঁদে পা দেয়, তারা নানাভাবে প্রতারিত হয়। এমনকি এসব ফেসবুকের আইডি হ্যাকড করে বিভিন্ন জনের কাছে ছড়িয়ে দেয়া হয়। সংযুক্ত করা হয় নানারকম ছবি। এতে করে ওইসব ব্যবহারকারী সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে বাধ্য হয় অন্য ব্যবহারকারী। এছাড়া তাদের দেওয়া নম্বরে ফোন করতে গেলে ফোন স্ক্যামিংয়ের কবলেও পড়তে হতে পারে। কয়েক সেকেন্ডেই ফোনের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে চক্রগুলো। তাই এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি।