DMCA.com Protection Status
title="৭

মিয়ানমারের পর এবার বাংলাদেশে সামরিক অভিযানঃবিএসএফ ফ্রন্টিয়ার আইজি সুদেশ কুমার

bsfক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মিয়ানমারের পর উত্তরপূর্ব ভারতের জঙ্গি তথা বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনে এবার বাংলাদেশে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত। বাংলাদেশের ভেতর ৩৯টি স্থানে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আস্তানা গেড়ে আছে, এমন একটি তালিকাও ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি’র কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি জঙ্গিরা মূলত বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের গভীর অরণ্যে গোপন শিবির করেছে-এমন দাবি করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)’র আইজি (মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার) সুদেশ কুমার বলেছেন, আত্মগোপনকারী উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানকে বাংলাদেশের সীমান্তেও বিস্তৃত করা হবে।

সম্প্রতি  ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে বিএসএফের আইজি (মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার) সুদেশ কুমার সাংবাদিকদের এই কথা বলেছেন। সুদেশ কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে উত্তরপূর্ব ভারতের পত্রিকাগুলো প্রথম পাতায় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে।

রবিবার উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খ এটি তাদের প্রধান শিরোনাম করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মাটিকে কিছুতেই উত্তর-পূর্ব ভারতের জঙ্গিদের মুক্ত বিচরণ ক্ষেত্র হতে দেওয়া হবে না বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঢাকা। সেই প্রতিশ্রুতি মতো বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে থাকা উত্তরপূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার থেকে জঙ্গি-বিরোধী যে অভিযান শুরু হয়েছে, শনিবার দ্বিতীয় দিনে তা আরও তীব্রতর হয়েছে। ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) প্রতিবেশী বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গি-বিরোধী অভিযানের সত্যতা স্বীকার করেছে।

 

বিএসএফ বলেছে, উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের উৎখাত করতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। শনিবার শিলংয়ে বিএসএফের আইজি (মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার) সুদেশ কুমার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে আত্মগোপনকারী উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানকে আরও তীব্রতর করে তোলা হচ্ছে।’ তিনি জানান, বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়া উত্তর-পূর্বের জঙ্গিরা বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এদের অপরাধী হিসাবে বিবেচনা করে অভিযান শুরু করেছে। বিএসএফের এই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের গভীর অরণ্যে উত্তর-পূর্বের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলির বেশ কিছু গোপন শিবির রয়েছে। শিবিরে আত্মগোপনকারী জঙ্গিদের গতিবধি নজর রাখতে বিএসএফ এবং বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-এর মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান হচ্ছে নিয়মিত।

 

যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সীমান্তে সম্প্রতি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাফাই অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। বিদেশের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ভারতীয় জঙ্গিদের উৎখাতে বর্তমানে উঠেপড়ে লেগেছে মোদি সরকার। তারই অঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের ৩৯টি শিবিরের একটি তালিকা বিজিবি’র হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ। গত বৃহস্পতিবার ১১ জুন শিলংয়ে বিজিবি-বিএসএফের এক যৌথ সম্মেলন শেষ হয়েছে। সেই সম্মেলনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিদের তালিকাটি তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের হাতে। সীমান্তে চোরাচালানসহ বাংলাদেশে সক্রিয় নানা জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা নিয়ে ঢাকার কাছে আপত্তি জানিয়েছে বিএসএফ। বিএসএফ উত্তরপূবাঞ্চলের ওই শীর্ষ কর্মকর্তার কথায়, ‘ভারতীয় ভূখণ্ডে নানা অনৈতিক কাজ করতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশের নাগরিকরা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের কাছে আবেদন জনানো হয়।

 

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নকট নোটের প্রচলন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএসএফ।’ যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আসামের জঙ্গি সংগঠন এনডিএফবি সংবিজিতপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে চলছে সেনা অভিযান ‘অপরেশন অলআউট’। এতদিন এই অপারেশনে ভুটান সেনার সহায়তা চায়নি নতুন দিল্লি। তবে মিয়ানমারে যখন আসামসহ উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘সার্জিক্যাল অপারেশন’ জোরদারভাবে অব্যাহত,ঠিক সেই সময়ে একসঙ্গে ভুটান সেনার সঙ্গে কৌশলগত বোঝাপড়ার মাধ্যমে আসামের ভুটান সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে সংবিজিতপন্থী জঙ্গিদের সাফাই করার অভিযান নতুন মাত্রা লাভ করেছে।

 

জানাগেছে, অপরাশেন অলআউট শুরুর পর থেকে আলোচনা-বিরোধী এনডিএফবি ক্যাডার ও নেতাদের অধিকাংশই ভুটানের জঙ্গলে পালিয়ে যায়। এমতাবস্থায় ভারত-ভুটান সীমান্তেও নতুন করে এনডিএফবি’র বিরুদ্ধে জোর অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী। নতুন দিল্লির আহবানে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ভুটান সরকার।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!